পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা ও বজ্রপাতে পুরো অঞ্চল কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর সময় একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়ে যায়। মুহূর্তেই আগুন ধরে গিয়ে এতে দুই পাইলটসহ পাঁচজন নিহত হন। জানা গেছে, হেলিকপ্টারটি প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর ব্যবহৃত বাহন ছিল।
মাত্র একদিনের মধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাকিস্তানে তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশেই বন্যা ও ভূমিধসে দুই শতাধিক প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরে ৯ জন এবং গিলগিট-বালতিস্তানে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নীলম ও ঝিলম উপত্যকায় অন্তত ৫০০ পর্যটক আটকা পড়েছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হলো বুনের রাজোর ও বাট গ্রাম, যেখানে প্রায় ২০০ মানুষের প্রাণ গেছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় দুর্গতরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জরুরি বৈঠক ডেকে দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ২৬ জুন থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণে পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত ৫০৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৫৯ জন শিশু। আহত হয়েছেন আরও ৭৬৮ জন।
পাকিস্তানের পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারতেও ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের কিস্তোয়ার অঞ্চলে ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন আশঙ্কা করছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজে মাঠে নেমেছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।