ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শিশির কুমার সানাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে জালাল উদ্দিন নামে এক কৃষক দল নেতার বিরুদ্ধে। এ সময় তিনি চিকিৎসককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্ত্বরে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক। এর আগেও তিনি এক যুবককে মারধরের কারণে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে লাঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শিশির কুমার সানা বলেন, সকাল থেকেই হাসপাতালের রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম।
উপর-নিচে রাউন্ড দিয়ে শেষ করতে পারছি না। গতকাল বোর্ড করে প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দিয়েছি দুইজন চিকিৎসক। বোর্ডে দেওয়া মানে আজ না দেওয়ারই কথা। আজ একজন আসছিলেন চাপালী বাসা জালাল সাহেব নাম করে। উনি এসে বলেন প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দিতে হবে। তখন আমি বলি, গতকাল বোর্ড করে প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছি। আজ তো দেওয়ার কথা না।
তিনি আরো বলেন, এরপর জালাল সাহেব বলেন সমাজ সেবা অফিস থেকে দিয়ে দিয়েছে। এরপর আমি সমাজসেবা অফিসারকে ফোন দিলে তিনি বলেন আজ তো কাউকে পাঠায়নি। এরপর তিনি একজনকে ফোনে ধরিয়ে দেন। পরে তাকে বলি সমাজসেবা অফিসারের সাথে কথা বলে দেখছি। আপনি নিচে বসেন। কারণ রোগীর ছাড়পত্র নিয়ে কাজ করছিলাম। কিছুক্ষণ পর তিনি আরো একজনকে নিয়ে আমার কাছে আসেন।
এরপর তাকে বলি আপনাকে বললাম আমি দেখছি তারপরও আবার এর একজনকে নিয়ে আসছেন। এরপর জালাল সাহেবকে বলি আপনি কেন এতো লোকজন ধরে নিয়ে আসছেন। তখনই যা তা অবস্থা। তুই লোক ধরানোর দেখিছিস কি। একপর্যায়ে মারতে আসে এমন অবস্থা। একদমই খারাপ অবস্থা। সে আমাকে দেখে নিবে। এছাড়াও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি-ধামকি দিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক জালাল উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটা প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেটের জন্য গিয়েছিলাম। আমি তার সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করিনি। তাকে বলেছি আপনি স্বাক্ষর করতে পারলে করবেন, না করতে পারলেও বলবেন। বোর্ড বসাবেন কিনা সেটা আপনাদের ব্যাপার।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজাউল করিম বলেন, আমি পৌরসভার মিটিংয়ে ছিলাম। এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। আমি শুনে দেখছি।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষকদলের আহবায়ক ওসমান আলী বিশ্বাস বলেন, তথ্য প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রমাণ পেলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে এ বছরের ৯ এপ্রিল উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে এক যুবককে মারধরের অভিযোগে বহিষ্কার হয় জালাল উদ্দিন। পরে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এছাড়াও উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে গিয়ে নির্বাচন অফিসার ও এক প্রধান শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ রয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।