কঠোর নিরাপত্তা রক্ষায় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ
যশোরের ঝিকরগাছায় ৫৪টি পূজা মন্দিরে মহাসাড়ম্বরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের পূজা অনুষ্ঠান ঘিরে প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিপুলসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিরাপত্তার কাজে একনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকা জুড়ে দুর্গোৎসবের এই মহাযজ্ঞানুষ্ঠান সারম্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার পাশাপাশি ঝিকরগাছা থানার পুলিশ, আনসার ভিডিপি সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালী সরকার নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পূজার অনুষ্ঠান নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি প্রয়োজনে সেনাবাহিনী নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিটি পূজা মন্দির সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে এবং সার্বক্ষণিক মনিটারিং চলছে।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাভিদ সারওয়ার বলেন, পূজা মন্দির গুলোতে নিয়মিত মনিটরিংসহ সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক দাবি করে থানার অফিসার ইনচার্জ নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, পুলিশের মোবাইল টিম মাঠ পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কোথাও কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই দাবি করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে এবারের সার্বজনীন দুর্গোৎসব ঘিরে প্রশাসনের পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ঝিকরগাছা উপজেলা ও পৌর শাখা ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঝিকরগাছা উপজেলা ও পৌর শাখার পক্ষ থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে আর্থিক সহায়তা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।
পূজার সার্বিক অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন করতে এ দুটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করা হয়। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামাদ হাসান নিপুন বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আলাদা করে দেখার কোন অবকাশ নেই। আমরা পারস্পরিক আস্থা, শ্রদ্ধাবোধ, সৌহার্দ্য-সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী।সার্বজনীন দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন করতে প্রতিটি ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। দলের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতার পাশাপাশি প্রতিটি মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা ও উপহার সামগ্রী তাদের হাতে তুলে দিয়েছি। আগামীতেও তাদের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহি টিপু তাঁর দলের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের নিরাপত্তা ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা সার্বজনীন উৎসব-আনন্দমুখর ও নিরাপদ-নির্বিঘ্ন করতে আমরা ঝিকরগাছা পূজা উদযাপন পরিষদসহ সকল নেতৃবৃন্দের সাথে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির মতবিনিময় অনুষ্ঠান করেছি। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। তাদের সব ধরনের সহযোগিতার কথাও বলে এসেছি।
মন্দিরগুলোতে পরিদর্শনে গিয়ে আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছি।আমাদের তারুণ্যের অহংকার ‘জনতার মেয়র’ দলের সাধারণ সম্পাদক এড সামাদ হাসান নিপুন সকলের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আমাদের দলীয় স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু দুলাল অধিকারী বলেন, এবারের পূজা উদযাপনে কোন নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মৃণাল কান্তি দত্ত বলেন, এবারের পূজা উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে কোথাও কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আমরা পাইনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।