ডিলারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা
যশোরে এক নারী কর্মীকে অফিসে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক প্রতিষ্ঠানের ডিলারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী যশোর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সোহেল, তিনি শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার বাসিন্দা ফিরোজের ছেলে। জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অভিযোগ ছিল এবং তিনি স্ত্রী হত্যা মামলারও আসামি ছিলেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকায় ডিপো ইনচার্জ হিসেবে কাজ করেন। অপরদিকে অভিযুক্ত সোহেল ওই প্রতিষ্ঠানের ডিলার। ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে সোহেল তার ফোন নম্বর সংগ্রহ করেন। পরদিন সকালে কাজের কথা বলে প্রথমে তার বাড়ির সামনে যান এবং পরে পৌরপার্কে নিয়ে যান। সেখান থেকে কৌশলে স্টেডিয়ামপাড়ায় অফিসে ডেকে নিয়ে পাশের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। সেখানে তিনি ওই নারীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। নারীটি রাজি না হলে প্রথমে ধর্ষণের চেষ্টা করেন এবং পরে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী বিষয়টি তার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে সহায়তা করেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সোহেলের বিরুদ্ধে এর আগেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের এসপি ও ইন্সপেক্টর পর্যায়ে তার আত্মীয় রয়েছেন এবং তাদের প্রভাব খাটিয়ে তিনি নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।
অভিযুক্ত সোহেলের সঙ্গে কথোপকথনের একাধিক ভয়েস রেকর্ড স্থানীয় গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। সেখানে শোনা যায়, তিনি ওই নারীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন—‘তুমি কি ব্যস্ত? ব্যাচেলর থাকো, না ফ্যামিলি বাসায় থাকছো?’ আরেকটি রেকর্ডে শোনা যায়, তিনি ওই নারীকে ফ্ল্যাটে বসিয়ে ফোন সাইলেন্ট করতে বলছেন। তখন নারীটি প্রশ্ন করেন, “আপনি আমাকে অফিসে আসতে বলে ফ্ল্যাটে কেন আনলেন?” উত্তরে সোহেল বলেন, “বস, বস আমি আসছি।”
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সোহেল। তিনি দাবি করেন, এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তার বক্তব্য অনুযায়ী, কোম্পানির কাছে তার ৩১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। তাই মেয়েটিকে ডেকে আনা হয়েছিল। তিনি স্বীকার করেছেন যে, প্রথমে কলেজ মোড়ে কথা বলেন এবং পরে মানুষ যাতে না দেখে তাই অফিসে ও ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। তবে তিনি দাবি করেন, সেখানে কেবল ধাক্কাধাক্কি হয়েছে, ধর্ষণ নয়।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, অভিযোগটি আমলে নেওয়া হয়েছে। একটি বিশেষ টিম তদন্তে নেমেছে এবং ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম চলছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।