বাংলাদেশের উপকূলীয় কৃষিতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিল গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির গবেষকদল উদ্ভাবন করেছেন লবণসহিষ্ণু গমের নতুন একটি জাত, যার নাম ‘জিএইউ গম-১’।
সম্প্রতি জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে (১৭ জুন) এ জাতটির সরকারি অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম ময়নুল হক ও ড. মো. মসিউল ইসলাম-এর নেতৃত্বে তিন বছরব্যাপী গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত এই জাতটি বিশেষভাবে দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমির উপযোগী। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, মাত্র ৯৫–১০০ দিনে পরিপক্ব হওয়া এই গম প্রতি হেক্টরে ৩.৭৫ থেকে ৪.৫ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।
গবেষক ড. মো. মসিউল ইসলাম জানান, দেশে প্রায় ১০ লাখ হেক্টর লবণাক্ত জমিতে এ জাতের গম চাষ করা সম্ভব। এতে করে উপকূলীয় কৃষকরা আমন ধান কাটার পরপরই এই গম চাষ করতে পারবেন, যা আয়ের নতুন পথ খুলে দেবে।
নতুন গমে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং কম ফ্যাট, যা পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। পাশাপাশি এর মোটা কাণ্ড থেকে বেশি পরিমাণ খড় পাওয়া যাবে, যা গবাদিপশুর খাদ্য কিংবা জ্বালানির কাজে ব্যবহারযোগ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,
“জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এমন একটি গমের জাত উদ্ভাবন দেশের কৃষি খাতের জন্য একটি মাইলফলক। এটি উপকূলীয় কৃষকদের জন্য বাস্তবিক অর্থেই আশীর্বাদ হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মৌসুম থেকেই কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণ শুরু হবে, এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ গমের চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।