তালা মারার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আশাশুনির বড়দলে দোকান ঘরে তালা মারার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আগের সংবাদ
বেনাপোল রেল স্টেশন পরিদর্শনে সাংবাদিকদের সাথে মহাপরিচালকের অসহযোগিতা

বেনাপোল রেল স্টেশন পরিদর্শনে সাংবাদিকদের সাথে মহাপরিচালকের অসহযোগিতা

পরের সংবাদ

যানজট, ফুটপাত দখল, অচল রাস্তা

কর্তৃপক্ষদের লোক দেখানো সেবায় অতিষ্ঠ মণিরামপুরবাসী

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৫ , ৯:৩৯ অপরাহ্ণ আপডেট: জুন ২১, ২০২৫ , ৯:৩৯ অপরাহ্ণ
যানজট, ফুটপাত দখল, অচল রাস্তা

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলার ব্যস্ততম শহর মণিরামপুর বাজারের চিরাচরিত যানজট ও ফুটপাত দখলের চিত্র নতুন কিছু না ভুক্তভোগীদের জন্য। ইতিপূর্বে স্থানীয় ও জাতীয় একাধিক দৈনিক পত্র-পত্রিকা ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হয়েছে। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেই কতৃপক্ষের। সাংবাদিক, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এমনকি পথচারীরাও যানজটের দীর্ঘ লাইনের ভিডিও স্ব স্ব ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট শেয়ারের কমেন্টেসে মন্তব্যে উপজেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দিকে বিদ্ধ হয়েছে সেবার নামে উদাসীনতার অভিযোগের তীর।
যানজটের ভোগান্তির সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের গরুহাট মোড় থেকে খাদ্যগুদাম পর্যন্ত প্রায় ১কিঃমিঃ ঢালাই রাস্তার ছোট বড় মিলিয়ে ৪৭টি গর্ত।এর আগেও একাধিকবার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ পেলে রাস্তার গর্তের পুটিং দিয়ে দায় এড়িয়ে গেছেন। গেলো কয়েকদিনের টানা বর্ষনে সে সমস্ত গর্তে পানি জমে যানবাহনের যাতায়তে এখন খানা-খন্দে পরিনত হয়েছে।
তথ্য আছে,২০২০-২১ অর্থ বছরে যশোরের রাজারহাট থেকে মনিরামপুর হয়ে চুকনগর পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্তকরণের জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে চারজন ঠিকাদার কাজ করেন। এর মধ্যে মনিরামপুর থেকে চিনেটোলা পর্যন্ত কাজটি সম্পন্ন করে মেসার্স কপোতাক্ষ এন্টারপ্রাইজ। তবে এই ঠিকাদারী কাজের সরেজমিন ও অফিসিয়াল ডকুমেন্টসের সাথে পাওয়া গেছে গড়মিল।
তথ্য অনুসন্ধানে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের খোজ নিতে গেলে জানা যায়, যশোর জেলা আ”লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক যশোর-৬ আসনের এমপি শাহীন চাকলাদের ভাই যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র নিয়মবহির্ভূত রেন্টু চাকলাদার ও ঠিকাদার বাবু পাটোয়ারী একক ভাবে দীর্ঘ ৩৮ কিঃ মিঃ রাস্তার ঐ কাজে করেছেন নয়-ছয়।
যশোর সড়ক ও জনপদ(সওজ) বিভাগের আওতাধীন রাজারহাট-চুকনগর মহাসড়ক প্রশস্তকরণ এ কাজের মধ্যে মনিরামপুর পৌর শহরের নির্মানকৃত ঢালায় রাস্তার বেশ কয়েক জায়গায় বড় বড় গর্ত ও ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটলের স্থানে ঢালাইয়ের নিচে রডের মাথা বেরিয়ে এসেছে। গর্ত, ফাটল এবং রডের মাথায় পানি জমে গাড়ি ও পদব্রজে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে। বের হয়ে আসা রডের মাথায় লেগে দূর্ঘটনায় সম্প্রতি বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মনিরামপুর বাজারের কুলটিয়া মোড়, থানা মোড়, ফল বাজার, কালী মন্দির, প্রেসক্লাব গেট ও পূরবী সিনেমা হলের সামনে, ভেনাস পয়েন্টের সামনে,লিবার্টির সামনে,বড় বড় গর্ত সহ ফাটলে সড়কের অবস্থা বর্তমানে খুবই নাজুক।
রাস্তার পার্শবর্তী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ,শুরু থেকেই ঠিকাদার এই সড়কে কাজে গড়িমসি করেছেন। বাজারের ভেতর সড়কের দুই পাশে পানি নিষ্কাশনের জন্য কোনো ড্রেন নির্মাণ করা হয়নি। বাজারের বাইরে সড়কের দুই পাশে ড্রেন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হলেও তাতে ময়লা জমে থাকায় পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির সময় ড্রেনে ময়লা পানি জমে মশার বংশ বিস্তারও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এছাড়া, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার ফলে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। রাস্তায় বড় বড় গর্তে গাড়ি পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ ব্যাপারে ২০২৩ সালে কাজের বছর না পেরোতেই ফাটল ও গর্ত দেখা দিলে সে সময়,সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরিচালক প্রকৌশলী মাসুদ রানা দাবি করেছিলেন ‘কংক্রিটের সমস্যা থাকায় সড়কের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল দ্রুত মেরামত করে দেয়া হবে।
পরবর্তীতে সওজের কোন রকম জোড়া-তালিতে চলছিলো মহসড়কের ব্যস্ততম যানবাহন।
যশোর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানালেন,সড়কটি ব্যাস্ততম হওয়ায় জমাট প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়ের আগেই যান চলাচলে স্ট্রং না হয়ে নিচেই হাওয়া ঢোকাতে বেহাল দশা।
সওজ কর্মকর্তাদের তথ্যমতে,সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারের জামানতের বিল এখনও পরিশোধ করা হয়নি।একাধিক ২টা নোটিশ দিলেও যোগাযোগ করেনি ঠিকাদারি ঐ প্রতিষ্ঠান।
এদিকে মণিরামপুরের যানজটে প্রায়ই সময় আটকা পড়ে এ্যাম্বুলেন্স,নির্ধারিত সময়ে গন্ত্যবস্থলে পৌঁছাতে না পেরে মন্তব্যের স্বীকার হয় অনেকে।মহাসড়কের দুপাশ দিয়ে বড় বড় ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সাথে বিগত সৈরাচারী শাষকের জনপ্রতিনিধিদের বান্ডেল আতাতে জনগনের ভোগান্তি বাড়লেও বাড়েনি রাস্তার আয়তন। দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ আর নাম মাত্র পরিছন্নতা কর্মী দিয়ে কয়েকদিন যানজট এড়াতে মণিরামপুর উপজেলা প্রশাসন কাজ করালেও আবারও সেই ভোগান্তির জাতাকলে পৃষ্ঠ হচ্ছে মণিরামপুর বাসী। অবশ্য গেলো মাসে যানজট নিরসন ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পৌরসভা ভবনে যানজট নিরসনের জন্য কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যাক্তি,গনমাধ্যম ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিদিদের সামনে আগামিতে ‘একনেকে’র বিল উদ্থাপনে রাস্তা প্রশস্তকরনের দাবী উদ্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না।
উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ও মণিরামপুর বাসীর জনভোগী একাধিক ভোগান্তীর বিপরীতে সঠিক সেবার পরিবর্তে নাম মাত্র সেবার এই বেহালদশার চিত্র দিন গেলেই বেড়েই চলেছে।রাস্তার গর্ত ও নিম্নমানের কাজের বিপরীতেও তেমন কোন পজিটিভ ছায়ার দেখা নেই সড়ক ও জনপদ বিভাগের।
যা অনেকটা যে কোন কম্পানির “ফ্লেভার ” দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন ফলের জুসের মতো। যা বোতলের বডিতেি লেখা থাকে যেমন- “ম্যাংগ ফ্লেভার ড্রিংকস”। কারন, যে মূল্যে কম্পানি একটা বোতলজাত ড্রিংকস দেই, ফ্লেভারের স্থলে রিয়েল জুস করলে তার মূল্য হতো আরো অনেক বেশি।
ফ্লেভার ড্রিংসের মতো মণিরামপুরবাসীও সেবা পাচ্ছে, তবে সেটা সঠিকভাবে না। সেবার মানে অনেকটা স্বাদ বা ফ্লেভার পাওয়ার মতো।এরইমধ্যে অতিষ্ঠ মণিরামপুর বাসীর জন্য আরেকটি দুঃসংবাদ হলো- করোনা।
তবে করোনা মোকাবেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স করোনা ইউনিট বলে ঘোষনা করা হয়েছে, পৌরসভায় মাক্স বিতরন হবে ও নির্দেশনা আসলে জানানো বলে জানা মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না।
এদিকে, নির্বাচিত সরকারের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বশীল হয়ে এ সমস্ত সমস্যার সমাধান ছাড়া পথ নেই বলে ভাবছেন সুধীজনেরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়