ভারতের পাচারের শিকার ৩৬ বাংলাদেশি শিশুকে বেনাপোল সীমান্তে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ। মঙ্গলবার(২৭ মে) বিকাল ৫ টায় ভারতের পেট্রাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে এদের বেনাপোল চেকপোষ্টে ফেরত পাঠানো হয়। এসময় সেখানে কলকতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দুতাবাস,উপজেলা সমাজ সেবা,উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
যারা ফেরত বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছেন, যশোরের আপন চন্দ্র সিংহ, আসমা খাতুন,রাহশাহীর আসমাউল হোসেন,নোয়াখালীর বিউটি রানি দেবনাথ,খুলনার, রহমত আলি, জিয়াউর রহমান,রাখি সানা,আয়াত মোড়ল,রিমি মোড়ল, মুন্সিগঞ্জের তহমিনা আক্তার, বাগেরহাটের শাকিল হাওলাদার, গোপালগঞ্জের সম্রাট গুপ্ত, আকাশ হক, কুড়িগ্রামের শাহিনুর আলন, হানিফ আলি, নাটোরের দেবজিৎ রয়, দিনাজপুরের রাসেল বাবু, সাতক্ষীরার ইব্রাহিম, ময়মনসিংহের সফর শেখ, নড়াইলের আব্দুস সবুর,, কক্সবাজার আল আমিন, ঢাকার সাজেদা ইয়াসমিন মুন্নি, কক্সবাজারের সালমা, নেত্রকোনার নাজমা খাতুম, রংপুরের ধিমান বারুই, মাদারিপুরের শ্রাবণ হোসেন, নরসিংদির রিফাত হোসেন, , ঠাকুরগাঁওয়ের রিদয় রয়, দিনাজপুরের ফারিয়া খান, ঢাকার জোহরা বেগম, লক্ষীপুরের সুমাইয়া আক্তার, চট্রগ্রামের,নোয়াখালীর নিঝুম দে,মাদারিপুরের মিলি আক্তার, ঝালোকাঠির সিথি রয় ও পঞ্চগড়ের প্রিয়ন্তি রয়।
আইনি সহায়তা দিতে এদের সীমান্ত থেকে গ্রহন করবেন, জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার,মহিলা আইনজিবী সমিতি ও রাইটস ও মানব উদ্ধার শিশু সুরক্ষা সংস্থ্যা নামে ৪ টি এনজিও সংস্থ্যা । দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে তারা ভারতে গিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল।
জানা যায়, পাচারের শিকার ৩৬ বাংলাদেশিকে উদ্ধারের পর ফেরত আনতে সরকারের পাশাপাশি কাজ করে মানবাধিকার ও এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো। এরা বিভিন্ন সময় পুলিশের হাতে আটকের পর ভারতের পশ্চিম বঙ্গের একটি হোমের আশ্রয়ে ছিল। এদের বয়স ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। আটকের পর আইনি জটিলতায়নকেউ কেউ দুই বছর থেকে ৮ বছর পর্যন্ত ভারতের হোমে থাকতে হয়েছিল।পরে ভারত-বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া স্বদেশ প্রত্যাবাসনে এরা দেশে ফেরার সুযোগ পায়।
পাচারের শিকার নারী,শিশুদের পরিবারের একজন চট্রগ্রামের পটিয়া উপজেলার ইয়াহিয়া সদস্য জানান, তার মেয়ে নবম শ্রেনীতে পড়তো। চাকুরীর প্রলোভন দিয়ে ভারত নিয়ে বিক্রী করে দেয় দালাল চক্র। মেয়েকে নেওয়ার জন্য তিনি বেনাপোল সীমান্তে এসেছেন।
মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থ্যার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম জানান, তাদের তথ্য মতে পাচারের শিকার প্রায় ৫০ হাজারের মত নারী,পুরুষ যারা ভারতে রয়েছে। আজকে যারা ফেরত এসেছে এর মধ্যে ৬ জনকে তিনি আইনী সহয়তা দিতে পুলিশের কাছ থেকে গ্রহন করেছেন। পাচারের পর এদের মধ্যে অনেককে ভারতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। কাউকে প্রেমের প্রলোভনে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল। অনেকের কাজের কথা বলেও প্রতারনা করে চক্রটি। ভারতে বিক্রির পর তাদেরকে দিয়ে ঝুকিপূর্ন কাজ করতে বাধ্য করে পাচারকারীরা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপপরিদর্শক ( এসআই) শাহাদৎ হোসেন জানান, আজ ৩৬ জন বাংলাদেশি ভারত থেকে ফিরেছে। তাদের আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।