বন্দর পরিচালনার ভার বিদেশিদের দিলে কঠোর কর্মসূচি

আগের সংবাদ

Amplifiez les sensations fortes grâce à betify app un univers crypto réinventent votre expérience.

পরের সংবাদ

মাসোহারা নেয় সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাক্তিরা

চট্টগ্রাম নগরে বেপরোয়া ব্যাটারি রিকশা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২৪ , ৭:০২ অপরাহ্ণ আপডেট: ডিসেম্বর ৮, ২০২৪ , ৭:০২ অপরাহ্ণ

গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকে চট্টগ্রাম মহানগরে শিথিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগে নগরীর অলিগলি ও মূল সড়ক দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। পরাগ ও বিভাটেক এর নির্মিত এই ইজিবাইক ও ব্যাটারি রিকশা দিনকে দিন আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। পুরো নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে তাদের দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে অন্যান্য যান ও পথচারীরা। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পেলেও এই বিষয়ে কারো কোন ভুমিকা চোখে পড়ছে না। এতে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত সরকারের পট পরিবর্তনের পর ভেঙে পড়েছে চট্টগ্রাম নগরীর ট্রাফিক পুলিশি ব্যবস্থা। কিছুদিন ছাত্র-জনতা নিজেদের উদ্যোগে রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করলেও পরে ছাত্র সমন্বয়কদের নির্দেশে উঠে যেতে বাধ্য হন তাঁরাও। এর মধ্যে অননুমোদিত এসব ব্যাটারি রিকশা চলছে অনেকটাই বাধাহীনভাবে।

এসব রিকশায় অদক্ষ চালকের এলোমেলো চলাচল, আইন না মানার প্রবণতা, উল্টোপথে চলা, যেখানে- সেখানে হুটহাট রিকশা ঘোরানো, পার্কিংসহ সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা। ঘটছে দূর্ঘটনা। যেন দেখার কিউ নেই। ট্রাফিক বিভাগ অনেক অসহায় ভাবে যেন তেন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বলেও অভিযোগ।

নগরীর নিউ মার্কেট, কোতোয়ালি, আগ্রাবাদ, জিইসি, ২ নম্বর গেইট, চকবাজার, বাকলিয়া নতুনব্রিজ, খুলশী, জালালাবাদ, বায়েজিদ, পোর্ট কলোনী, আকবর শাহ, হালিশহর, পাহাড়তলী এলাকা ঘুরে প্রায় সব মূল সড়কে অসংখ্য ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক চলতে দেখা গেছে। এতে বাড়ছে জনভোগান্তি, সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। গণপরিবহনকেও ওভারটেক করতে পিছপা হয় না এসব যানবাহন। এ বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা হলেও কোনোভাবেই এসব বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। চসিকও নীরব।

সিএমপি ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের হিসাব মতে, নগরীতে অন্তত ৫৫ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা রয়েছে। প্রতিদিন কয়েক শতাধিক রিকশা জব্দ করছে ট্রাফিক পুলিশ।

ট্রাফিক পুলিশের (দক্ষিণ) উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাহবুব আলম খান বলেন, ৫ আগস্টের আগে জব্দ করা ব্যাটারিচালিত রিকশা ৩ হাজার ৩৫০ টাকা জরিমানা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো। এখন জব্দ করলে ২১ দিন পর ৭৫০ টাকা জরিমানা নিয়ে ছাড়া হয়।

একাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আগে ট্রাফিক পুলিশ অনেক সমস্যা করত, তাই মূল সড়কে উঠত না। শুধু রাতে মূল সড়কগুলোতে চলাচল করতেন তারা। কিন্তু বর্তমানে অবস্থা পাল্টে গেছে। কারণ পুলিশ কিছু বলে না। আর এই সুযোগে তারা কাউকে তোয়াক্কা না করেই চলাচল করছে।

তথ্য মিলে, একটি প্যাডেল চালিত রিকশা বানাতে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আর ব্যাটারি চালিত রিকশা বানাতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। নিম্নআয়ের মানুষ এই অর্থ ধারদেনা করে জোগাড় করে রিকশা বানিয়ে সড়কে নেমে পড়েন।

এছাড়া ব্যাটারি রিকশা নিয়ে সড়কে উঠতে পারার সুযোগে এর চাহিদাও বেড়েছে অনেক। এসব রিকশা চার্জ করার জন্য নগরীতে কয়েক হাজার চার্জিং স্টেশন গড়ে উঠেছে। সরকারিভাবে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও চার্জিং স্টেশনের অনুমোদন না থাকলেও স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে ও চাঁদা দিয়ে চালাতে হয় এসব রিকশা ও চার্জিং স্টেশনও।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এখন ব্যাঙের ছাতার মতো তৈরি হচ্ছে রিকশা। বাহির থেকে মালামাল আসলেও ফিটিংস হচ্ছে চট্টগ্রামে। যার কোনো পরিসংখ্যান সরকারি- বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের হাতে নেই।

এসব রিকশা নিয়ন্ত্রণেও নেওয়া হচ্ছে না কোনো কার্যকরী উদ্যোগ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি আয়ের আশায় এখন অল্প টাকায় রিকশা বানিয়ে অনেকেই সড়কে নেমে পড়ছেন। প্রতিদিন শত শত রিকশা তৈরি হচ্ছে শহরের বিভিন্ন ছোট-বড় গ্যারেজে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান বলেন, আগস্টের পর থেকে সড়কের এনফোর্সমেন্ট ঢিলেঢালা। এই সুযোগে বেশি আয়ের আশায় যেসব রিকশা পাড়া-মহল্লায় চলতো তা মূল সড়কে চলছে। তাই সড়কে বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী উপজেলার অসংখ্য রিকশা শহরে প্রবেশ করেছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চট্ট মেট্রো-১ সার্কেল এর মোটরযান পরিদর্শক মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘এসব ব্যাটারিচালিত রিকশার কোনো অনুমোদন দেয়নি বিআরটিএ। ফলে এসব অবৈধ যানবাহন।’

এ প্রসঙ্গে সিএমপি ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। প্রতিদিন রিকশা জব্দ হচ্ছে তবুও এসব অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম্য থামছে না। সামনের নগরীর সড়কগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়