প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫ , ৯:৫৭ অপরাহ্ণ আপডেট: আগস্ট ৩, ২০২৫ , ৯:৫৭ অপরাহ্ণ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্র-শিক্ষক সংহতি দিবস উপলক্ষে জুলাই শহিদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় ও স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। এসময় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার ১৭ টি শহীদ পরিবারের মাঝে উপহার প্রদান এবং আন্দোলনে আটক হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১ জন শিক্ষার্থীদেরকে সংবর্ধনা স্মারক দেওয়া হয়। রোববার বেলা সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এ আয়োজন করেন জুলাই বিপ্লব প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটি।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সহ-সমন্বয়ক, শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া আন্দোলনকারী সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারীরা ও বিভিন্ন শিক্ষক-ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় শহিদ হওয়া সবুজ হোসেন স্ত্রী রেশমা খাতুন আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, আমার হাসব্যান্ড ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে শহিদ হয়েছেন। সে কুষ্টিয়াতেই ছোট একটা চাকরি করতো। সেই আমাদের পরিবারের একমাত্র কর্ণধার ছিল। আমার হাসব্যান্ড যখন আন্দোলনে গিয়েছিল, তখন আমার কোলে একমাসের শিশু বাচ্চা ছিল। স্ত্রী-সন্তানের মায়া ত্যাগ করে আমার হাসব্যান্ড আন্দোলনে গিয়েছিল। আমি আমার স্বামীকে শেষবার দেখতেও পারিনি। সেই কষ্ট, আর্তনাদ, বেদনা আমি বলে বোঝাতে পারবো না। আমার সেই বাচ্চার বয়স এখন এক বছর, আরেক বাচ্চার বয়স ছয় বছর। আমার পরিবারে আমার হাসব্যান্ড ছাড়া কেউ ছিল না। এখন আমাকে দেখার মতো আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। আমি মামলা করেছি। তবে আমি কোনো বিচার পাচ্ছি না। আমার হাসব্যান্ড জীবন দিয়েছে তাতে আমার কোনো দুঃখ নাই, আমি স্বৈরাচারের বিচার চাই। আমি ফ্যাস্টিস্টদের ফাঁসি চাই।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, এই শহীদ পরিবারকে যেন আমরা ভুলে না যাই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনা আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন, আমরা পরিবর্তন করেছি। শহীদদের নামে নামাঙ্কিত হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সামনের যে স্থাপনাগুলো, সেই স্থাপনাগুলোও ছাত্র-শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে শহীদদের নামেই নামাঙ্কিত হবে। আমরা যারা বেঁচে আছি, যারা আমাদের বাঁচার জন্য সহযোগিতা করেছে আজীবন তাদের জন্য দোয়া করবো। আমরা যাতে শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে পারি, আল্লাহর কাছে এই তৌফিক কামনা করছি।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।