আশাশুনিতে এলসিএস (Local Contract Scheme) প্রকল্পের আওতায় রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণে মহিলা নিয়োগ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিকার চেয়ে আজ সোমবার (২১ জুলাই, ২০২৫) বেলা ১১:৩০ টায় উপজেলা পরিষদের মেইন গেটের মুখে সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহিলা কর্মী নিয়োগে বঞ্চিত মহিলাদের আয়োজনে মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন বড়দলের ময়না খাতুন, আশাশুনির ডলি খাতুন, কোদন্ডা গ্রামের প্রতিবন্ধী (বোবা) আছিরনের পক্ষে তার বোন আলেয়া খাতুন এবং বাদপড়া সুপারভাইজার সাহেব আলী।
বক্তাগণ অভিযোগ করেন, উপজেলা প্রকৌশলী অনিন্দ্য কুমার দেব সরকারি নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে এলসিএস প্রকল্পের রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণে মহিলা কর্মী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ বাণিজ্য করেছেন। তাদের দাবি, তিনি সিও সাধন ঘোষের মাধ্যমে প্রত্যেক কর্মী নিয়োগে ১৫ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। যারা ঘুষ দিতে পারেননি, তাদেরকে বাদ দিয়ে অনিয়ম হলেও নিয়ম ভঙ্গ করে অযোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মহিলা নিয়োগ পাওয়ার কথা থাকলেও ঘুষের কারণে সে নিয়ম মানা হয়নি। কৌশল্যা, নাসরিন, মমতাজ, সালমাসহ অনেক ৩৫ উর্ধ্ব বয়সীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১০/১৫ বছর ধরে কাজ করার পরও নাসরিন, মনোয়ারা ও কৌশল্যাসহ আরও অনেককে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা নিয়মের পরিপন্থী। আরইআরএমপি প্রজেক্টে গত বছর কাজ করা কর্মীদের পুনরায় না নেওয়ার কথা থাকলেও আশাশুনির রেশমাসহ কাউকে কাউকে আবারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তারা আরও উল্লেখ করেন, আগের ইঞ্জিনিয়ার নাসিমুল হক ডলিকে স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে নিয়োগ দিয়ে গেলেও, ১০/১৫ বছর কাজ করা কর্মীদের নেওয়া হলেও তাকে নেওয়া হয়নি। বক্তাগণ দাবি করেন, সিও সাধন ঘোষ এবং চাকরিতে না থাকলেও সাবেক সিও খায়রুল যোগসাজস করে তাদেরকে বাদ দিয়ে অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য অবৈধ নিয়োগে সহায়তা করেছেন।
বাদপড়া সুপারভাইজার সাহেব আলী বলেন, তিনি সাধন ঘোষের নানা দুর্নীতির অভিযোগ এনে ইঞ্জিনিয়ার স্যারের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে মহিলা কর্মীদের ৫টি কম্বল আত্মসাতের অভিযোগও আছে। তাছাড়া, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, ইউএনও স্যার ও বিভিন্ন কর্মকর্তা ও নেতার সুপারিশ আছে ছলনা করে অনেককে লটারি ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বুধহাটা, নওয়াপড়া, শ্বেতপুর ও বেউলা গাজীরমাঠের কাউকে লটারীতে অংশ নিতে না দিয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। মানববন্ধন শেষে মহিলারা বিভিন্ন স্লোগানসহকারে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সিও সাধন ঘোষের মোবাইলে অসংখ্যবার কল করা হলেও রিং হলেও তিনি রিসিভ করেননি। উপজেলা প্রকৌশলী অনিন্দ্য দেব সরকারের মোবাইলে রিং করা হলে তিনি মেসেজ পাঠিয়ে জানান যে তিনি মিটিংয়ে আছেন, পরে কথা বলবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায় জানান, “আমি কথা বলে দেখছি, খোঁজ নিয়ে দেখি কি হয়েছে।” এই অভিযোগগুলো তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বঞ্চিতরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।