প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ

আগের সংবাদ

যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্মচারীরা পরীক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের অসাধাচরণ

পরের সংবাদ

বিপুলচালের গোপন মজুদের উৎস খুঁজে দেখার দাবি

ঝিকরগাছায় রিলিফের চাল মজুদকারীর লাখ টাকার জরিমানা

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৫ , ১০:০০ অপরাহ্ণ আপডেট: জুন ৪, ২০২৫ , ১০:০০ অপরাহ্ণ

ঝিকরগাছায় পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সরকারি বরাদ্দকৃত গরিবের বিপুল রিলিফের ( টিআর, কাবিখা) ঈদউপহারের চাল সস্তাদামে ক্রয় করে গোপন মজুদ ও ভারতীয় জনপ্রিয় চালেরব্র্যান্ড ‘নুরজাহান’ লোগো ব্যবহার করে তা রি-প্যাকিংয়ের মাধ্যমে চড়ামূল্যে বিক্রির প্রতারণার দায়ে নুর ইসলাম (৬০) ওরফে খোকন মিয়া নামে এক অতিমুনাফালোভী মজুদদার চাউল ব্যবসায়ীকে লাখ টাকার অর্থদণ্ড করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।

আদালত ওই ব্যক্তিকে জরিমানার অর্থ তাৎক্ষণিক অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ ঘোষণা দেন।

জানাগেছে, বুধবার (৪জুন) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভূপালি সরকার উপজেলা সদরের ঝিকরগাছা কাটাখাল এলাকার ‘জাপান কমিউনিটি সেন্টার’র নিচতলার একটি গোডাউনে আকস্মিক অভিযান চালান।

এসময় ওই গোডাউনের ভাড়াটিয়া ও চাউল ব্যবসায়ী নুর ইসলাম ওরফে খোকন মিয়ার উপস্থিতিতে তার গোডাউনে বিপুল পরিমাণ টিআর,কাবিখার বরাদ্ধকৃত সরকারি চালের গোপন মজুদ হাতেনাতে ধরা পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে,মজুদকৃত এই চালের পরিমাণ প্রায় সহস্রাধিক বস্তা। চালভর্তি সরকারি বস্তার পাশাপাশি সেখানে ‘ ভারতীয় নুরজাহান লোগো সম্বলিত বিপুল পরিমাণ চালভর্তি বস্তাসহ নুরজাহান লোগোর নতুন খালিবস্তা পড়ে থাকতে দেখা যায়। একইস্থানে চাল রি-প্যাকিং করে ভারতীয় লোগো নুরজাহান ব্রান্ডের নতুন বস্তায় ভরে বাজারজাতকরণে সেলাই মেশিন লক্ষ্য করা গেছে।

প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি তার প্রতারণা ও কৃতকর্মের দায় ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে অকপটে স্বীকার করে লিখিত জবানবন্দি দিয়েছেন।

ভ্রাম্যমান আদালত চলাকালে উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি)মোহাম্মদ আল-আমিন বিশ্বাস, ঝিকরগাছা থানার উপ’পুলিশ পরিদর্শক তাপস কুমারসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান চলাকালে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতার পাশাপাশি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, গোপন মজুদকৃত এই বিপুল পরিমাণ চালের প্রকৃত উৎস কি তা তদন্তের জোরদাবী উঠেছে। এই চাল সরকারি গোডাউন থেকে ডিওলেটার’র মাধ্যমে নাকি অন্য কোন অসাদোপায়ে মজুদ গড়ে তোলা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ, ঈদ উপহারের কার্ডধারী প্রতি ১০কেজির খুচরা চালে হাজারবস্তার চালের মজুদ জনমনে সন্দেহের উদ্রেক করেছে। কে বা কার মাধ্যমে কয়টি ডিও লেটারের মাধ্যমে এই চাল কেনা হয়েছে তাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। রাতারাতি এই চালের মজুদ অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হতে পারে বলেও আশঙ্কা অনেকের।

এদিকে ঝিকরগাছার একশ্রেণির অতিমুনাফালোভী মজুদদার চাউল ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে দেশিচাল ভারতীয় লোগো নুরজাহান ব্র্যান্ড ব্যবহার করে বিক্রি ও গোপন মজুদ গড়ে তোলার বিস্তর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ভোক্তা অধিকার নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সবসময় থেকেছে রহস্যময়,নির্বিকার-নিলিপ্ত।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি ভোক্তার অধিকার রক্ষার স্বার্থে সক্রিয় ভূমিকা পালন না করে রহস্যজনক ভূমিকায় অবতীর্ণ রয়েছেন।

গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, যশোর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তারা মাঝেমধ্যে গোপনীয়তা বজায় রেখে যশোরের ঝিকরগাছায় দু’একটি প্রতিষ্ঠান ও মজুদদার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে নামসর্বস্ব জরিমানা আদায় করে দায়িত্ব শেষ করেন। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তথ্য এড়িয়ে অনেকটা লুকোচুরির মাধ্যমে বিদায় নেন।

ভোক্তাসাধারণ ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত ও রহস্যময় ভূমিকা ও গোপনীয়তার কারণে ভুক্তভোগী ও সচেতনসাধারণ মানুষ ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নেতিবাচক বা বিরূপমন্তব্য করে থাকেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়