আর মাত্র তিনদিন পরেই ইসলাম ধর্মের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এই ঈদকে সামনে রেখে যশোর শহরের বড়বাজারে মুদি দোকানদাররা মসলা বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিদিন জেলার আট উপজেলা থেকে ছোট ব্যবসায়ীরা পাইকারিভাবে মসলা সংগ্রহ করছেন। পাইকারি দামে পণ্য পাওয়া যাওয়ায় শহরের বাসিন্দারাও এখান থেকে মসলা কিনছেন। সকাল ১০টার পর দোকান খোলেন ব্যবসায়ীরা, আর রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মসলার বাজারে ভিড় বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদুল আজহা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। এ উৎসবে মাংস কেনার প্রয়োজন পড়ে না। যারা কোরবানি দেন, তারা আত্মীয়স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে মাংস বণ্টন করেন। তাই রান্নার জন্য মসলার চাহিদা থাকে অনেক বেশি। এই কারণে যশোরের বড়বাজারে মুদি দোকানগুলোতে এখন জমজমাট মসলার বেচাকেনা চলছে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দোকানিরা বেশি পরিমাণে পণ্য মজুত করেছেন। বিক্রি হচ্ছে জিরা, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, হলুদ, তেজপাতা, আদাসহ নানা রকম মসলা।
বড়বাজারের ‘সাধন স্টোর’-এর স্বত্বাধিকারী অসীম কুন্ডু জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তিনি ঢাকার বড় বড় দোকান থেকে প্রচুর পরিমাণে মসলা আমদানি করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে জিরা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, দারচিনি ৪২০ থেকে ৫২০, এলাচ ৪৩০০ থেকে ৪৯০০, লবঙ্গ ১২০০ থেকে ১৩৫০, হলুদ ২৩০ থেকে ২৫০, তেজপাতা ১২০ থেকে ১৪০ ও আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের সময় এসব মসলার চাহিদা বাড়ে, তাই বিক্রিও ভালো হয়।
ভোলানাথ স্টোরের অরবিন্দু কুমার পাল বলেন, “কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা একটু বেশি থাকে। কারণ, সবার ঘরেই মাংস থাকে, রান্নার জন্য বেশি মসলা লাগে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার দোকানিরা আমাদের কাছ থেকে পাইকারিতে মসলা নিয়ে যান। তাই আমরা আগেভাগেই বেশি মসলা আমদানি করি।”
দিলীপ স্টোরের মালিক দিলীপ ঘোষ বলেন, “এবার ঈদে শহরের গৃহিণীরা এখন থেকেই মসলা কেনা শুরু করে দিয়েছেন। ঈদের দিন রাত পর্যন্ত বিক্রি চলবে। আশা করছি, গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রি বেশি হবে।”
শহরের ধর্মতলা এলাকার বাসিন্দা পলি খাতুন, যিনি সদর উপজেলার দিয়াড়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা, জানান, তিনি ও তার স্বামী, যিনি কলেজে সহকারী অধ্যাপক, এবার গরু কোরবানি দেবেন। “আমাদের দু’জনেরই চাকরি, তাই কোরবানির বাজেটটা তুলনামূলকভাবে বেশি। রোজার ঈদে ৪০০ টাকার মসলা কিনেছিলাম, এবার নিয়েছি ৮০০ টাকার মসলা।”
শহরের খালধার রোডের বাসিন্দা খায়রুজ্জামান রানা, যিনি মোটর পার্টস ব্যবসায়ী, জানান, তিনি নিজেই একটি গরু কোরবানি দেবেন। “ঈদে তেমন পোশাক কেনাকাটা করি না, তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে মসলা কিনতে বাজারে এসেছি। সব মিলিয়ে ১৫০০ টাকার মসলা কিনেছি,” বলেন তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।