ধামাচাপার চেষ্টায় প্রভাবশালিরা :
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের পল্লীতে প্রতিবেশী দাদার ধর্ষণে ৫মাসের অন্তসত্ত্বা প্রতিবন্ধী অবুঝ ১৩ বছর বয়সের কিশোরী। ঘটনার বিষয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় কাজ করে চলেছে স্থানীয় মাতব্বারেরা বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে প্রতিবেশী ধর্ষক দাদা হল রায়পটল গ্রামের মৃত. নুর আলীর ছেলে ফজলুর রহমান ফজু (৬৫)।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যেয়ে জানা যায়, উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের রায়পটল গ্রামের দিনমজুর আমির হোসেন স্ট্রোক জনিত কারণে তিনি প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা জীবিকা অর্জনের জন্য এলাকার কিছু বাড়ীতে কাজ করে সংসার পরিচালনা করেন।
তারই ধরাবাহিকতায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী ফজলুর রহমান ফজুর বাড়ীতে কাজ করতেন প্রতিবন্ধী আমির হোসেনের অবুঝ ১৩ বছর বয়সের কিশোরী। এই কিশোরীকে বিভিন্ন সময়ে ফজুর লালসার শিকার বানিয়ে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে কিশোরী ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে মেডিকেল পরিক্ষার পর বুঝতে পারেন অসহায় পরিবার। আর এই ঘটনা এলাকার মধ্যে প্রকাশ পেয়ে গেলে স্থানীয় মাতব্বর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সহ স্থানীয় মাতব্বরের মাধ্যমে একটা মীমাংসার চেষ্টা চলমান রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, আপনারা যে তথ্য পেয়ে এসেছেন ঘটনাটি সত্য। তবে এ ঘটনার বিষয়ে আপনাদের স্থানীয় মাতব্বরা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দিবে না। বিয়ে দিবে, বাচ্চা নষ্ট করে, ৫বিঘা জমি দিবে, আবার কখনও ৩০ লক্ষ টাকার মাধ্যমে ঘটনার ধামাচাপার চেষ্টা চলছে। তবে উক্ত বিষয়ে কিশোরী পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে তার মেয়ে বাহিরের কারও সামনে আনছে না।
ঘটনার বিষয়ে কিশোরীর বাড়িতে গেলে কিশোরীর মা তার মেয়ে বাড়ির পাশে আছেন। মেয়েকে ডাকতে গেলে পার্শ্ববর্তী মেয়ের চাচাতো ভাই নয়নের স্ত্রী রুমি ভাবী তাকে সংবাদকর্মীদের সামনে আসতে দেন না। পরবর্তীতে রুমি সংবাদকর্মীদের সামনে এসে বলেন মেয়ের অভিভাবক সহ সবাই বাঁকড়া বাজারের মিজান হাজীর ওখানে যান। ওখানে গেলে সব তথ্য পাওয়া যাবে।
প্রতিবেশী ধর্ষক দাদা ফজলুর রহমান ফজু এর সাথে যোগাযোগ করতে তার বাসায় গেলে তিনি ঘর থেকে বের না হয়ে তার স্ত্রীকে দিয়ে সংবাদকর্মীদের কে জানান, ঐ ছেমরির বহু লোকের সাথে সম্পর্ক। কিন্তু ইনি পাড়া প্রতিবেশী হিসেবে দাদা হয়।
আমরা সহ্য করতে পারছি না। সব গ্রামের ষড়যন্ত্র। ওরা বেশ কিছু দিন আগে ষড়যন্ত্র করে আমার কবুতর মেরে ফেলেছিল। এটা নিয়ে আমি ক্যাম্পে বিচার দিয়ে ছিলাম। তারপর থেকে ওদের আমাদের উপর রাগ। যা হোক অন্যায় আমাদেরই। ওরা বলতে চাচ্ছে আমাদের মেয়ের পেটে বাচ্চা তোমাদের নিতে হবে। বাচ্চা ফেলানো যাবে না। মেয়ে মুখ দিয়ে বলেছে। এখন এলাকার লোকজন এই বিষয়ে বসতে চেয়েছে।
স্থানীয় মাতব্বর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিজানুর রহমান (মিজান হাজী) বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আইনের আশ্রয়ে না গিয়ে, আপনারা ধর্ষকের কি করতে চান ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সামাজিক ভাবে ধর্ষকের শাস্তির ব্যবস্থা করবো।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অনিতা মল্লিক বলেন, আমি ঢাকায় প্রশিক্ষণে আছি। তদন্ত করে দেখছি বিষয়টি।
থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে আমাদের নিকট কোন অভিযোগ আসেনি যদি অভিযোগ আসে আমরা তদন্ত পূর্বক অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালী সরকার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ওসি সাহেব কে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।