মনিরামপুর বালিয়াডাঙ্গা খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী নওশীন মোস্তারি (৯) শৌচাগারে ৩ ঘণ্টা আটকা পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। প্রথম ক্লাসের পর ওই শিক্ষার্থী বাথরুমে প্রবেশের পর কে বা কারা বাইরে দরজার ছিটকিনি আটকে দেয়। সেই থেকে শিশুটি বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। টানা ৩ ঘন্টা আটকা থেকে কান্না করে শিশুটি। তার কান্নার শব্দ শব্দ শুনে এক কৃষক তাকে উদ্ধারে দেয়াল বেয়ে উপরে উঠতে গিয়ে ছিটকে পড়ে আহত হন। বিষয়টি আশপাশের লোকজন দেখতে পেয়ে কৃষককে উদ্ধার করেন। তার মুখ থেকে মানুষ জানতে পারে বাথরুমে এক শিশুর কান্না শোনা যাচ্ছে। পরে শিশুটিকেও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টিকে শিক্ষকদের অবহেলা উল্লেখ করে বিকেলে ওই শিক্ষার্থীর বাবা বিল্লাল হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়, বুধবার সকালে প্রথম ক্লাস করার পর বিদ্যালয়ের শৌচাগারে ঢোকে তার শিশুকন্যা নওশীন। এরপর বাইরে থেকে কেউ দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে দরজা বন্ধ দেখে নানাভাবে বের হতে চেষ্টা করে নওশীন শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। একপর্যায়ে বিদ্যালয়ের পেছনে মাঠে কাজ করা কৃষককেরা তার কান্না শুনে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। ওই সময় দেয়াল বেয়ে উঠতে গিয়ে তিনি পড়ে গিয়ে আহত হন। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
শিশুটির বাবা অভিযোগ করেন, ‘বিদ্যালয়ে ৭জন শিক্ষক রয়েছেন। একটা মেয়ে প্রথম ক্লাস করার পর শ্রেণিকক্ষে ব্যাগ রেখে কোথায় গেছে, সেটা খোঁজার প্রয়োজন মনে করেননি তাঁরা। এটা শিক্ষকদের অবহেলা ছাড়া কিছুই না।’
ভুক্তভোগী নওশীন জানায়, সে শৌচাগারে ঢোকার পর বাইরে থেকে কে বা কারা দরজা আটকে দেয়। পরে সে অনেক চেষ্টা করে বের হতে কিন্তু সম্ভব হয়নি। কান্নাকাটি করতে করতে দরজা খুলতে ধাক্কা দিয়ে সে আঘাত পেয়ে প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে। এতে তার হাত কেটে গেছে। বাইরে থেকে কেউ দরজা না খোলায় দুই দফা ওপরে উঠে বের হওয়ার চেষ্টা করে নিচে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিশির মন্ডল দাবি করেন, ‘২-৩ ঘণ্টা নয়, মেয়েটি ১০-১৫ মিনিট শৌচাগারে আটকা ছিল। পরে শিক্ষকেরা গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।’
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ডেকে এনেছি। শিশুটির পরিবারও উপস্থিত ছিল। সবকিছু শুনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
মনিরামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মোত্তালেব আলম বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। আমি সরেজমিন তদন্তে যাব।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।