গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি পরিত্যক্ত রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাহারা সুপারমার্কেটের পাশের ওই গুদামে হঠাৎ বিস্ফোরণের পর আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে আশপাশের এলাকা ঘন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। খবর পেয়ে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তাসহ পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। গুরুতর অবস্থায় দুজনকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।
দগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শাহীন, পরিদর্শক আবু নাঈম, ফায়ার ফাইটার শামীম (৪৫), নুরুল হুদা (৪৫) ও জয় হাসান (২৫)। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হুদা ও শামীমের শরীরের শতভাগ দগ্ধ হয়েছে, আর কর্মকর্তা জান্নাতুল নাঈমের শরীরের ৪২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, টিনশেডের ওই গুদামে একটি পোশাক কারখানার ওয়াশিং ও ডায়িংয়ের রাসায়নিক মজুত ছিল। বিকেলে হঠাৎ বিস্ফোরণের পর ভেতরে থাকা লোকজন বের হয়ে আসেন। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর কাজ শুরু করলে রাসায়নিকের ড্রামে আবার বিস্ফোরণ ঘটে এবং কয়েকজন দগ্ধ হন।
ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক মো. সালেহ উদ্দিন জানান, খবর পাওয়ার পর বিকেল ৩টা ২১ মিনিটে ইউনিটগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান শুরু করে এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে রাসায়নিক থাকায় পুনরায় আগুন জ্বলার ঝুঁকি রয়েছে বলে তিনি সতর্ক করেন। ক্ষয়ক্ষতি ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে দগ্ধ ফায়ারকর্মীদের দেখতে সোমবার রাতেই জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে যান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সব সময় কাজ করে থাকেন। টঙ্গীর ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক শাওন বিন রহমান বলেন, চারজন ফায়ার সার্ভিস সদস্য চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাকিরা সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা পাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।