সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আটক

আগের সংবাদ

সরকারি চাকরিতে কড়া শৃঙ্খলা আইন: ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত, হতে পারে বরখাস্ত!

পরের সংবাদ

বাবা, আমি বন্ধুদের সাহায্য করেছি—জানালা দিয়ে শুয়ে থাকা দীপ্তর আর্তি!

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫ , ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ আপডেট: জুলাই ২৪, ২০২৫ , ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ

ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় জীবন-মৃত্যুর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নাভিদ নাওয়াজ দীপ্ত। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চতুর্থ তলার আইসিইউতে (বেড নং ৩) অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে দীপ্ত, যার শরীরের প্রায় অর্ধেক অংশ আগুনে ঝলসে গেছে।

আইসিইউর সামনে চোখে পানি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন দীপ্তর বাবা মিজানুর রহমান বিপ্লব। তিনি জানান, ‌”আমার ছেলে সাহসী ছিল, বন্ধুরা যেন বিপদে না পড়ে তাই সেদিন সে ক্লাসরুমে থেকে গিয়েছিল। আগুনে পোড়া শরীর নিয়েও আমাকে বলেছে—‘বাবা, আমি বন্ধুদের সাহায্য করেছি, আমি নিশ্চয়ই বেঁচে যাবো।’ এই কথাটা আমাকে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।”

দীপ্তর মা নুরুন নাহার ও ছোট বোন নাইরা আফরিন—তিনজন মিলে ছিল তাদের ছোট্ট সুখের পৃথিবী। ঘটনার দিন দুই ভাইবোন একসঙ্গে স্কুলে যায়, তবে নাইরা আগেই বাড়ি ফিরে আসে। গেটে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল মা, হঠাৎ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে স্কুল চত্বর। মুহূর্তেই বদলে যায় সব। মায়ের জ্ঞান হারানো আর ভাইয়ের পুড়ে যাওয়া ঘটনা একসাথে দেখে মেয়েটি কান্নায় ভেঙে পড়ে।

দীপ্তকে প্রথমে সিএমএইচে নেওয়া হয়, পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। পরিবার এখন হাসপাতালেই অবস্থান করছে।

এ দুর্ঘটনায় নিজের জীবন দিয়ে অন্তত ২০ শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়েছেন মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষিকা মেহরিন চৌধুরী, যিনি ছিলেন মিজানুর রহমানের স্কুলজীবনের বন্ধু। তার আত্মত্যাগেও দীপ্তর পরিবার শোকাহত ও গর্বিত।

চিকিৎসকদের মতে, দীপ্তর অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও আশাবাদী তারা। একজন চিকিৎসক বলেন, “সব শিশুই আমাদের সন্তান। আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করছি।”

এ পর্যন্ত বিমান বিধ্বস্তে ৩২ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৮ জন শিশু৫১ জন ভর্তি হয়েছিলেন বার্ন ইউনিটে, দুইজন সেখানেই মারা গেছেন।

দীপ্ত পাখি ভালোবাসে। মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে থেকেও তার মুখে পাখির যত্নের কথা শুনে মিজানুর রহমান বলেন, “নিজের ওপর ঘৃণা হচ্ছে, একদিন রেগে গিয়ে পাখি ছাড়তে বলেছিলাম। আজ আমার সেই ছেলেটাই মৃত্যুর সাথে লড়ছে!”

দীপ্তর পরিবারের অনুরোধ, দেশবাসী তার জন্য দোয়া করুক—যাতে সে আবার পাখিদের সঙ্গে হাসতে পারে, ছোট বোনের হাত ধরে স্কুলে ফিরতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়