জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (Proportional Representation – PR) পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। দলটির দাবি—বর্তমান প্রথম-ভোটে-জয় পদ্ধতি (FPTP) জনমতকে যথাযথভাবে প্রতিফলিত করে না।
শনিবার (২০ জুলাই) এক জনসভা থেকে জামায়াত এই দাবি জোরালোভাবে তোলে। দলটির নেতারা বলেন, “জনগণের প্রকৃত রায় ও মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া উচিত।”
কী এই পিআর পদ্ধতি?
পিআর বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব এমন এক নির্বাচনি পদ্ধতি যেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক দল পায় তাদের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসন। অর্থাৎ যে দল যত ভোট পাবে, তাদের সংসদে তত শতাংশ আসন বরাদ্দ হবে—একটি ন্যায্য বণ্টনের ভিত্তিতে।
বিপরীত অবস্থানে বিএনপি
অন্যদিকে বিএনপি এই প্রস্তাবকে দেখছে ভিন্নভাবে। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এই প্রস্তাবটি সরকারপন্থী একটি মহলের পরিকল্পনার অংশ, যার উদ্দেশ্য হতে পারে নির্বাচন বিলম্বিত করা।
বিএনপির এক নেতা বলেন, “যারা পিআর নিয়ে মাঠে নেমেছে, তাদের উদ্দেশ্য গণতন্ত্র নয়—বরং সময়ক্ষেপণ করে সরকারের স্বার্থ রক্ষা। আমরা এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছি।”
জামায়াতের ব্যাখ্যা
জামায়াতের এক কেন্দ্রীয় নেতা বিবিসিকে বলেন, “আমরা পিআর পদ্ধতির পক্ষে কারণ আমরা মনে করি, এখনকার পদ্ধতিতে জনগণের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত হয় না। আমরা চাই একটি ‘কোয়ালিটি নির্বাচন’, যেখানে প্রতিটি ভোট সমান মূল্য পাবে।”
রাজনীতিতে ভবিষ্যৎ প্রভাব কী?
এই প্রস্তাবকে ঘিরে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের মত। বিশেষ করে দেশের দুটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের বিপরীত অবস্থান বিষয়টিকে জটিল করে তুলছে।
নির্বাচন কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে এভাবে জনসমক্ষে বিরোধিতা ও পাল্টা প্রস্তাবনা—আগামী দিনে রাজনৈতিক সমঝোতার জায়গা আরও সংকীর্ণ করতে পারে বলেই আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।