গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষে ৩ জন নিহত, শহরে কারফিউ জারি

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে ভয়াবহ হামলা-সংঘর্ষে অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে। হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গোপালগঞ্জ শহরে কারফিউ জারি করেছে।

নিহত ও আহতদের তথ্য: নিহতরা হলেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮) এবং টুঙ্গীপাড়ার সোহেল রানা মোল্লা (৩০)।

বুধবার (১৬ জুলাই, ২০২৫) বিকালে গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিকালে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়, যাদের শরীরে গুলির চিহ্ন ছিল। এছাড়াও, আরও ৯ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে এবং তাদের অস্ত্রোপচার চলছে। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত আরও অনেকে চিকিৎসা নিলেও তাদের সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায়নি।

কারফিউ জারি: ব্যাপক সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেস উইংয়ের পাঠানো বার্তায় গোপালগঞ্জে কারফিউ জারির ঘোষণা দেওয়া হয়। বার্তায় বলা হয়েছে, আজ বুধবার রাত ৮টা থেকে পরবর্তী দিন (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ কার্যকর থাকবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অস্থিরতা ও সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কারফিউ চলাকালীন সময়ে জনসাধারণের চলাচল সীমিত থাকবে এবং বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হতে পারবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকবে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।

সংঘর্ষের বিবরণ: এর আগে বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জে এনসিপির সভা শেষে ফেরার পথে দলটির গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনার সময় গোপালগঞ্জ কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এমনকি পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে।

এই ব্যাপক সংঘর্ষ, হতাহতের ঘটনা এবং কারফিউ জারির ফলে গোপালগঞ্জে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।