ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে যশোর ও চৌগাছায়
কুরবানী ঈদের দীর্ঘ ছুটিতেও যশোর সদর ও চৌগাছা উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনার দপ্তরের অধীনে চলেছে মা ও শিশু স্বাস্থ্যর উপর বিশেষ সেবা। পরিবার পরিকল্পনার বিভিন্ন সামগ্রী এবং কাউন্সিলিং সেবা পেয়েছে উপজেলা দুটির সেবাগ্রহীতা পরিবারের সদস্যরা। জানা গেছে, চলতি বছর পবিত্র ঈদ উল আজহাতে দীর্ঘ ১০দিন ছুটির কবলে পড়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি, আর্থিক এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।
দীর্ঘ ছুটির কারণে গ্রামাঞ্চলের মা ও শিশুদের স্বাস্থের উপর এই ছুটির কোন প্রভাব না পড়ে সেজন্য পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালক এবং বিভাগীয় পরিচালকের পক্ষ থেকে ছুটিকালীন সময়ে মা ও শিশুর স্বাস্থের উপর বিশেষ সেবা প্রদানের নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনার আলোকে ঈদ-উল-ফিতরের দীর্ঘ ছুটিতে যশোর সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের অধীন যশোর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং উপশহর ইউনিয়ন, বসুন্দিয়া ইউনিয়ন, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন, কচুঁয়া ইউনিয়ন, ফতেপুর ইউনিয়ন, রামনগর ইউনিয়ন, চাঁচড়া ইউনিয়ন, আরবপুর ইউনিয়ন, দেয়াড়া ইউনিয়ন, চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন, নওয়াপাড়া ইউনিয়ন, ইছালী ইউনিয়ন, হৈবতপুর ইউনিয়ন, কাশিমপুর ইউনিয়ন ও লেবুতলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং চৌগাছা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের অধীনস্থ চৌগাছা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং নারায়ণপুর, সুখপুকুরিয়া, স্বরুপদাহ, হাকিমপুর, পাতিবিলা, জগদীশপুর, ফুলসারা, পাশাপোল, ধুলিয়ানী, সিংহঝুলী ও চৌগাছা সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থেকে মা ও শিশু স্বাস্থ্যের উপর এই বিশেষ সেবা প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ছুটিকালীন বৃহস্পতিবার (৫জুন) থেকে শনিবার (১৪জুন) ১০ দিন যশোর সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীরা নিরলসভাবে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের নির্দেশনা মেনে বিভিন্ন সেবা প্রদান করেন। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলার আওতাধীন যশোর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র থেকে ২৫ মা’কে গর্ভবতী সেবা ও পরামর্শ, ৭মা’কে স্বাভাবিক প্রসব সেবা, ১০ মা’কে প্রসব পরবর্তী সেবা প্রদান করা হয়।
একইভাবে চৌগাছা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চৌগাছা ইউনিয়নের ১২ জনকে খাবার বড়ি, ১১জনকে ব্যবহার সামগ্রী, ৭জনকে ইনজেকশন, ১জনকে আইইউডি সেবা, ১৭জনকে গর্ভবতী সেবা ও কাউন্সিলিং, ৬জনকে প্রসব সেবা, ৬জনকে প্রসবোত্তর সেবা এবং ১৫ দম্পতিকে মটিভিশন করা হয়।
এছাড়া ছুটির এই ১০ দিনে যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে পরিবার পরিকল্পনার অধীনে ১৯জনকে খাবার বড়ি, ১জনকে ব্যবহার সামগ্রী, ৫জনকে গর্ভকালীন সেবা ও পরামশ, ২জনকে প্রসব পরবর্তী সেবা, ৭জনকে কিশোর-কিশোরী সেবা এবং ২০ জনকে সাধারণ সেবা।
কাশিমপুরে ২জনকে গর্ভকালীন সেবা, ২জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ১জন কিশোরীকে সেবা ও ৫জনকে সাধারণ সেবা। হৈবতপুরে ২জনকে গর্ভকালীন সেবা, ১জন কিশোরীকে সেবা, ১জনকে ব্যবহার সামগ্রী ও ৫জনকে সাধারণ সেবা। ইছালীতে ২জনকে গর্ভকালীন সেবা, ৩জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ৭ কিশোর-কিশোরীকে সেবা, ১জনকে ব্যবহার সামগ্রী ও ৬সাধারণ সেবা।
চুড়ামনকাটিতে ১২জনকে গর্ভকালীন সেবা, ১জনকে প্রসবকালীন সেবা, ৩জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ৫জনকে কিশোর-কিশোরীকে সেবা, ৪জনকে ইনজেকশন, ১জনকে ব্যবহার সামগ্রী ও ১০ জনকে সাধারণ সেবা। দেয়াড়ায় ১জনকে গর্ভকালীন সেবা ও ৩জনকে সাধারণ সেবা, আরবপুরে ২জনকে গর্ভকালীন সেবা, ১জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ২কিশোর ও কিশোরীকে সেবা ও ৮জনকে সাধারণ সেবা।
চাঁচড়ায় ৭জনকে গর্ভকালীন সেবা, ১জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ২৩ কিশোর ও কিশোরীকে সেবা, ১৪ সাধারণ সেবা। রামনগরে ৩জনকে গর্ভকালীন সেবা, ১জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ৬ কিশোর ও কিশোরীকে সেবা, ২ জনকে ইনজেকশন, ৮জন অনুর্দ্ধ ৫বছর বয়সী সেবা ১২জনকে সাধারণ সেবা। ফতেপুরে ২জনকে গর্ভকালীন সেবা, ১জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ৫কিশোর ও কিশোরীকে সেবা ও ২জনকে সাধারণ সেবা। কচুঁয়াতে, নরেন্দ্রপুরে ১জনকে গর্ভকালীন সেবা, ২কিশোর ও কিশোরীকে সেবা, ১জনকে ব্যবহার সামগ্রী ও ২ জনকে সাধারণ সেবা। বসুন্দিয়াতে ২জনকে গর্ভকালীন সেবা, ২জনকে খাবার বড়ি, ২জনকে অনুর্দ্ধ ৫বছর বয়সী সেবা, ৭জনকে সাধারণ সেবা এবং উপশহর ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ৫জনকে গর্ভকালীন সেবা, ১জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ৮কিশোর ও ২ কিশোরীকে সেবা, ৮জনকে ইনজেকশন, ৩জনকে খাবার বড়ি, ৩জনকে ব্যবহার সামগ্রী, ৬ জনকে অনুর্দ্ধ ৫বছর বয়সী সেবা ও ২৬জনকে সাধারণ সেবা প্রদান করা হয়। একইভাবে চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নে ১২জনকে খাবার বড়ি, ১০জনকে ব্যবহার সামগ্রী, ২৩জনকে ইনজেকশন, ১০জন গর্ভবতী সেবা, ৬জনকে প্রসবোত্তর সেবা, ১১কিশোর কিশোরী সেবা এবং ১৪জনকে অনুর্ধ ৫বছর বয়সী সেবা দেয়া হয়।
নারায়নপুরে ২জনকে খাবার বড়ি, ৯জনকে ব্যবহার সামগ্রী, ৪জনকে ইনজেকশন, ৭জন গর্ভবতী সেবা ও কাউন্সিলিং, ৫জনকে দীর্ঘ
মেয়াদী পদ্ধতি সম্পর্কে কাউন্সিলিং, ৪কিশোর-কিশোরীকে কাউন্সিলিং, ৪জনকে প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি বিষয়ে কাউন্সিলিং ছাড়াও ২ শিশুকে পরবর্তী সেবার জন্য রেফার করা হয়। স্বরূপদাহ ইউনিয়নের ১৬জনকে খাবার বড়ি, ১৩জনকে ব্যবহার সামগ্রী, ৭জনকে ইনজেকশন
৪জনকে গর্ভবতী সেবা, ৮জনকে শিশু সেবা ও ৩০ জনকে সাধারণ সেবা দেয়া হয়। পাতিবিলা ইউনিয়নে ২জনকে খাবার বড়ি, ২জনকে ব্যবহার সামগ্রী, ১জনকে ইনজেকশন, ২জনকে গর্ভবতী সেবা, ২ কিশোর-কিশোরীকে সেবা, ২জনকে দীর্ঘ মেয়াদি পদ্ধতি সম্পর্কে কাউন্সিলিং, ২জনকে প্রসব
পরবর্তী সেবা এবং ১টি স্বাভাবিক ডেলিভারি সম্পন্ন করা হয়েছে। সিংহঝুলী ইউনিয়নের ৭জনক খাবার বড়ি, ৫ জনকে ইনজেকশন ও ৪জনকে ব্যবহার সামগ্রী দেয়া এবং ২জনকে গর্ভবতী মায়ের সেবা ও কাউন্সিলিং করা হয়।
জগদীশপুর ইউনিয়নের ১১জনকে ইনজেকশন, ১২জনকে খাবার বড়ি, ১১জনকে ব্যবহার সামগ্রী প্রদান এবং ১জনকে গর্ভবতী মায়ের সেবা, ১জনকে গর্ভবতী সেবা, ৪জনকে শিশু সেবা, ৪ জনকে কিশোর-কিশোরী সেবা। হাকিমপুরে ২জনকে গর্ভবতী সেবা, ৩জনকে প্রসবত্তোর সেবা, ৬জনকে খাবার বড়ি, ৪জনকে ব্যবহার সামগ্রী, ৩জনকে ইনজেকশন দেয়া হয়।
সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের ৩জনকে খাবার বড়ি, ১১জনকে ইনজেকশন, ৯জনকে ব্যবহার সামগ্রী এবং ২জনকে গর্ভবতী মায়ের সেবা ও কাউন্সিলিং, ৩জনকে দীর্ঘমেয়াদী কাউন্সিলিং, ৫ কিশোর-কিশোরীকে সেবা ও ৪জনকে প্রসব পরবর্তী সেবা দেয়া হয়। এছাড়া ধুলিয়ানী ইউনিয়নের ৪ জনকে ব্যবহার
সামগ্রী, ৪জনকে ইনজেকশন ও ৪জনকে খাবার বড়ি, ৬জনকে দীর্ঘ মেয়াদী সেবায় উদ্বুদ্ধ করা, ৮জনকে গর্ভবতী সেবা, ৬শিশুকে সেবা ও ২০জন কিশোর কিশোরীকে সেবা দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে চৌগাছা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং যশোর সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মিথুনুর রহমান বলেন, চলতি বছর ঈদ উল আজহায় দেশ দীর্ঘ ছুটির কবলে পড়ে। পরিবার পরিকল্পনা অফিসও একইভাবে দীর্ঘ ছুটিতে পড়ে। এতে করে পরিবার পরিকল্পনা সেবার আওতাধীন পরিবারগুলো সেবা বঞ্চিত হওয়ার আংশকা দেখা দেয়। এই সংকট কাটাতে ও সেবা কার্যক্রম চালু রাখতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালক ও খুলনা বিভাগীয় পরিচালকের পক্ষ থেকে বিশেষ সেবা প্রদানের নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনার আলোকে আমরা ছুটির দিনগুলোতেও কাংঙ্খিত পর্যায়ে বিশেষ সেবা প্রদান করেছি। তিনি বলেন, এই সেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমার মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।