ঘোড়াঘাট উপজেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় বিএনপির আলোচনা সভা

আগের সংবাদ

যশোর কেশবপুর থানায় সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় মতবিনিময়

পরের সংবাদ

মহম্মদপুরে নারী উদ্যোক্তা বিউটি খাতুনের সাফল্য

বিভাগীয় পরিচালকের খামার পরিদর্শন

প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৪ , ৯:০৯ অপরাহ্ণ আপডেট: আগস্ট ১১, ২০২৪ , ৯:০৯ অপরাহ্ণ

‘পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’। পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরকেও এভাবেই সম্মান দেখিয়েছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আর বর্তমানে নারীরা কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই। তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ঘরে ও ঘরের বাইরে নানা পেশায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করছেন এবং সফলতা অর্জণ করছেন। ফলে তৈরী হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা।

এমনি এক সফল নারী উদ্যোক্তা বিউটি খাতুন। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দুরে ধোয়াইল গ্রামে গেলে তার বাড়ীর দেখা মেলে। বাড়ীর প্রবেশ গেট দেখে কিছু মনে না হলেও, বাড়ীর ভিতরে গেলে দেখা মিলবে বড়সড় একটি গরুর খামার। যে খামারে রয়েছে বিভিন্ন জাতের ছোটবড় দশটি গরু। এর মধ্যে উন্নত জাতের যে গাভীগুলো রয়েছে তার প্রতিটির বাজার মূল্য আড়াই লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত।

তিনি একজন স্ত্রী, একজন মা, একজন গৃহীনি, রাঁধেন এবং চুলও বাঁধেন। এই সব কিছুই একজন নারীর স্বাভাবিক গতানুগতিক উপাধিমাত্র। কিন্তু সবকিছু ছাড়িয়ে বিউটি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে বেশ পরিচিত এবং এলাকার নারীদের অনুপ্রেরণা। ইতোমধ্যে প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. নুরুল্লাহ্ মো. আহ্সান, জেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিহির কান্তি বিশ্বাস ও উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা.সুব্রত সেন বিশ্বাসবিউটির খামার পরিদশন করেছেন এবং সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালে মাত্র একটি গাভী দিয়ে শুরু হয় বিউটির খামারের যাত্রা। ধীরে ধীরে গাভী বাড়তে থাকে এবং সমস্যাও সৃষ্টি হতে থাকে।

স্থানীয় পশু ডাক্তার ও উপজেলা পশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে এখন সে সফল খামার ব্যবসায়ী এবং এলাকায় একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে বেশ পরিচিত। এলাকার অনেকের কাছে বিউটি এখন অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। বিউটিকে অনুসরণ করে অনেকেই নিজ উদ্যোগে স্বাবলম্বি হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন।

নারী উদ্যোক্তা বিউটি খাতুন জানান, স্বামীর সংসারে এসে মনে হলো আমার নিজের কিছু করা প্রয়োজন। স্বামীর অনুপ্রেরণা ও নিজের প্রচেষ্টায় একটি গাভী গরু দিয়ে খামার গড়ে তোলার চেষ্টা করি। সে অবস্থা থেকে এখন আমি মুটামুটি সফল। আমার খামারে বিভিন্ন জাতের দশটি গরু রয়েছে, তার মধ্যে তিনটি গাভী এখন দুধ দেয় এবং তিনটি গাভী বাচ্চা দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ লিটার দুধ দেয়। এর থেকে ২০ লিটার মিল্ক ভিটা কোম্পানী নেয় এবং বাকী দুধ স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়।

জানা যায়, উপজেলা সদরে জাঙ্গালিয়া গ্রামের আলী আকবর মুসল্লি ও হাসিনা বেগমের বড় মেয়ে বিউটি খাতুন, বিয়ে হয় ধোয়াইল গ্রামের এম.এ রইচ এর সাথে। এই দম্পত্তির দি্ইু মেয়ে এক ছেলে। স্বামী একটা প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরী করেন, চাকুরীর সুবাদে প্রায়ই বাইরে থাকতে হয় তাকে। বিউটির স্বপ্ন সংসারের উন্নয়নে স্বামীর পাশাপাশি নিজে কিছুটা করার। স্বপ্ন আর স্বামীর অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় গাভী গুরুর খামার গড়ে তোলেন। এখন বিউটি সবকিছু ছাড়িয়ে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে বেশ পরিচিত এবং এলাকার নারীদের অনুপ্রেরণা।

তার খামারে কাজ করা পাখি খাতুন বলেন, এই খামারে অনেকগুলো গাভী আছে। বাড়ীর পাশে তাই কাজ করতে পারছি। কিছু টাকা পায় এটা দিয়ে আমার সংসারের উপকার হয়।
উপজেল প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুব্রত সেন বিশ্বাস জানান, উদ্যোক্তাদের জন্য আমরা সব সময় কাজ করে থাকি। পশু হাসপতালের মাধ্যমে সরকারিভাবে যেসব সহযোগিতা আসে, আমরা চেষ্টা করবো বিউটি খাতুনের খামারের জন্য সব ধরণের সহযোগিতা করার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়