৩৯ চল্লিশ বছর পর/ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার ৩৯ বছর পর আজ শনিবার ( ১ জুন) এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯ টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন করা হয়। দ্বি-বর্ষিক এ নির্বাচনে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ ও ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ নামে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দিতা করে।
পরিচালনা পরিষদ সদস্য পদে অর্ডিনারী গ্রুপের ১২ টিতেই বিজয়ী হয়েছেন সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। তারা হলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, এমএ সামাদ, এএসএম এনায়েতুল্লাহ, হোসেন মোঃ আবু সাঈদ, মোঃ শামীম হোসেন মোল্লা, মোরাদিম মোস্তাকিম মনির, মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন, মোঃ রোকোনুজ্জামান, মোঃ আব্দুল মতিন, মোঃ আব্দুল হান্নান বাবু ও মোঃ মনিক মিয়া।
এছাড়াও এ্যাসেসিয়েট গ্রুপের ৫ টি পদের মধ্যে চারটিতে বিজয়ী হয়েছেন সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ। সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের বিজয়ীরা হয়েছেন ,মোঃ আতিকুল হাসান মাসুম, মোঃ মোজাহার আনোয়ার, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও মোঃ নাজিম উদ্দীন জুলিয়াস এবং ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ থেকে মোঃ মাহমুদুল ইসলাম ফোটন বিজয়ী হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানায় যায়, ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রী প্রতিষ্ঠার পর ব্যবসায়ীরা প্রথম ভোট দিলেন। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর কখনই ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়নি। সিলেকশনের মাধ্যমে কতিপয় চিহ্নিত ব্যবসায়ী দ্বারা কমিটি হয়ে আসছিল। এতে করে মুখ থুবড়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। সাধারণ ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
২০১৫ সালে ব্যবসায়ীদের দ্বন্দের কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। আদালতে মামলা পাল্টা মামলার কারণে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হয়। এক পর্যায়ে বানিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্র নাথ রায়কে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেন তিনি। ঢাক ঢোল পিটিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হলে ব্যবসায়ীরা জেগে উঠেন।
দুটি শক্তিশালী ব্যবসায়ী প্যানেল সৃষ্টি হয়। “সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ” ও “ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ” নামে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন তারা (ব্যবসায়ীরা)।
অর্ডিনারী গ্রুপের ১২ টি ও এ্যাসেসিয়েট গ্রুপে ৫টি পদে (মোট ১৭টি ) অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে ৩৭ জন প্রতিদ্বান্দতা করেন। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে জেলা শহরের হামদহ এলাকার নিজস্ব ভবনে ভোট গ্রহন করা হয়। তুমুল প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিপুল সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। দিনভর সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। কঠোর নিরাপত্তায় রাত ৭টার দিকে ভোটের ফলাফল ঘোষনা করেন প্রিজাইডিং অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার শ্রীজীব কুন্ডু। তিন সদস্যর নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া অক্তার চৌধুরী ।
মোট ভোটার ছিলেন অর্ডিনারী গ্রুপে ২০৮ জন ও এ্যাসোসিয়েট গ্রুপে ১৪১ জন। অর্ডিনারী গ্রুপে ভোট পড়েছে ১৮৭। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে ৬টি ভোট। এ্যাসোসিয়েট গ্রুপে ভোট পড়েছে ১২৬। বাতিল হয়েছে চারটি ভোট। প্রাপ্ত তথ্য মতে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ প্যানেল থেকে মাত্র একজন বিজয়ী হয়েছেন। তিনি হলেন মোঃ মাহমুুদুল ইসলাম ফোটন।
নির্বাচন শান্তিপুর্ণ উৎসব মুখোর হওয়ায় ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রীর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্র নাথ রায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।