টিউবওয়েল প্রতীকের ফরহাদ হোসেনের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ

আগের সংবাদ

মধু নাকি অ্যালোভেরা জেল?

পরের সংবাদ

রাইসির মৃত্যুতে আমরাও মর্মাহত, শোকাহত

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৪ , ৭:২৩ অপরাহ্ণ আপডেট: মে ২২, ২০২৪ , ৭:২৩ অপরাহ্ণ

ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। ব্যাপক অনুসন্ধানের পর গত সোমবার পুড়ে যাওয়া হেলিকপ্টার থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সময় এলাকাটিতে খুব ঘন কুয়াশা ছিল। এ কারণে অনুসন্ধান অভিযান চালানোও কঠিন হয়ে পড়ে।

দুর্ঘটনাস্থলে ৪০টির বেশি উদ্ধারকারী দল, অনুসন্ধানকারী ড্রোন পাঠানো হয়। প্রেসিডেন্টের বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। বাকি দুটি নিরাপদে অবতরণ করে। রাইসির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন। ইরানের প্রেসিডেন্টের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে আমরাও গভীরভাবে মর্মাহত, শোকাহত। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ রক্ষণশীল নেতা রাইসির এই আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে ডালপালা মেলেছে নানা গুঞ্জন।

৬৩ বছর বয়সি এই নেতার মৃত্যু নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে রয়েছে কোনো ষড়যন্ত্র, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের কুদস বাহিনীর কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করেছিল। রাইসির মৃত্যুতেও এমন কিছুর গন্ধ খুঁজছে ওই দেশের জনগণ। ইরান সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ হিসেবে বৃষ্টি, ঘন কুয়াশাসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কথা বলা হয়েছে। বাজে আবহাওয়ার খবর ইরানি কর্তৃপক্ষের কাছে থাকার কথা। এরপরও কেন রাইসিকে নিয়ে উড়ে গেল হেলিকপ্টারটি? ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার পর ইরানসহ ফিলিস্তিনপন্থি লাখো মানুষের আঙুল এখন ইসরায়েলের দুর্র্ধষ গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদের দিকে।

ইরান ও ইসরায়েলের ঐতিহাসিক বৈরিতার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ ইরানিদের অনেকের অনুমান, হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে ইসরায়েলের সংশ্লিষ্টতা থাকতেও পারে। দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক বৈরিতার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক ইরানি অনুমান করেছেন, এ দুর্ঘটনার পেছনে ইসরায়েলের হাত থাকতে পারে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। দামেস্কে ইরানের দুই শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে ইসরায়েলের হত্যা এবং পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলের ওপর ইরানের শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার কারণে রাইসির মৃত্যুর পেছনে ইসরায়েলের হাত থাকার সন্দেহটি জোরদার করছে। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী মিডিয়া ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিধ্বংসী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে ইসরাইলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে ঘোষণা করেছে দেশটির কর্মকর্তারা।

রাইসির মৃত্যুতে যদি কোনোভাবে ইসরায়েল কিংবা পশ্চিমা বিশ্ব জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে, তাহলে আগামী দিনে বৈশ্বিক রাজনীতি আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে- এ আশঙ্কা করাই যায়। তার মৃত্যু হলো এমন এক সময়ে, যখন বিশেষ সংকটময় সময় পার করছে মধ্যপ্রাচ্য। সাত মাস ধরে ইসরায়েলের হামাসবিরোধী লড়াইয়ে গাজায় যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তা এখন বিশ্ববাসীর মনোযোগের কেন্দ্রে। গাজার এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে। নিঃসন্দেহে রাইসির মৃত্যু ইরানের জন্য একটি বড় ঘটনা।

তবে আমরা এখনো জানি না, এটি হত্যাকাণ্ড কিনা। ইরানের এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অল্প সময়ে নিখুঁত এবং স্বচ্ছ তদন্ত হবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। ইরানের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে দীর্ঘদিনের পথচলা। রাইসি পরবর্তী যুগেও দুদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে নিঃসন্দেহে। রাইসির মৃত্যুশোক কেটে ইরানি জনগোষ্ঠী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে আমরা আশা করি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়