জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় স্বাস্থ্য খাতের আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. সাব্বির ফয়েজ এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ দিন কারাগার থেকে মিঠুকে আদালতে হাজির করা হয়। দুদক তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। এ সময় আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. শফিকুল ইসলাম ও বোরহান উদ্দিন রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে, দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ১০ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে মিঠুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে দুদক। সেদিন আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং রিমান্ড শুনানির জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনোক্রেট নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মিঠু কৃষিজমি ক্রয়, জমি লিজ, প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি নির্মাণে মোট ১৮ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ার ও বিনিয়োগ, গাড়ি ক্রয়, ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী মিলিয়ে আরও ৫৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ তার নামে পাওয়া গেছে। স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
এ ছাড়া মিঠুর পারিবারিক ব্যয় হিসেবে ধরা হয়েছে ৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ সম্পদ ও ব্যয়সহ তার মোট হিসাব দাঁড়ায় প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অন্যদিকে অনুসন্ধানে বৈধ উৎস পাওয়া গেছে ৭১ কোটি ৪৯ লাখ টাকার। অর্থাৎ বৈধ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে প্রকাশিত বহুল আলোচিত পানামা পেপারসে মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর নাম উঠে আসে। অভিযোগ রয়েছে, তার মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ ও উন্নয়নকাজের নামে প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।