বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে প্রতারণা ও ছিনতাই মামলার সর্দার সোয়েব আক্তারসহ মোট ১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জন গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি এবং ৩ জন নিয়মিত মামলার আসামি।
সোমবার (১১ আগস্ট) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বেনাপোল থানার বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া। পরে গ্রেফতারদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
প্রতারণা ও ছিনতাই মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন—বড়আঁচড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে সোয়েব আক্তার (২৮), আনোয়ারের ছেলে বাবু (২৪), নজরুল ইসলামের ছেলে মাসুম (৪০), সাদিপুর গ্রামের মিয়ারাজ হোসেনের ছেলে ইশরাত (২৮), গাতিপাড়া গ্রামের জমির হোসেনের ছেলে মোমিনুর (২১), তালশাড়ি গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে নজরুল (৩৪), গোপালগঞ্জের বাগেরবাড়ি এলাকার সালাউদ্দিন শেখের ছেলে মাসুম শেখ (৩০) ও ভবারবেড় গ্রামের মুন্সি ব্যাপারীর ছেলে আবু সাঈদ ব্যাপারী (২৬)।
অন্যদিকে নিয়মিত মামলার আসামিরা হলেন—পুটখালি গ্রামের আকরম আলীর ছেলে রনি হোসেন (২৫), বড়আঁচড়া গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৬) এবং ইসমাইলের ছেলে তহিদুল ইসলাম (২৪)।
বেনাপোল বন্দর চেকপোস্ট ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আলী আশরাফ জানান, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় প্রতারণা ও ছিনতাই করে আসছিল। বিশেষ করে ক্যানসারসহ জটিল রোগে আক্রান্ত পাসপোর্টধারীদের জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নিত তারা। প্রায় এক যুগ ধরে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অপরাধ চালিয়ে গেলেও সম্প্রতি ব্যবসায়ী সমিতির অভিযোগে পুলিশ এ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী উজ্জ্বল জানান, ছাত্রলীগ কর্মী সোয়েব অত্যন্ত ভয়ঙ্কর প্রকৃতির। তার নেতৃত্বাধীন চক্রের হাতে বহু পাসপোর্টধারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিগত সরকারের সময় এরা সীমান্ত এলাকায় প্রতারণার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে এবং বর্তমান সরকার-সমর্থিত নেতাদের প্রশ্রয়ে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল।
সবশেষ ২১ ডিসেম্বর, ঢাকা কদমতলীর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মনোজ কুমার তার মেয়ে অবন্তী করকে নিয়ে ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বেনাপোল আসেন। ইমিগ্রেশন সংলগ্ন একটি এটিএম বুথের পাশে সোয়েব ও তার সহযোগীরা পরিবহন স্টাফ পরিচয়ে তাদের জিম্মি করে ৩৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে পুলিশের হাতে সোয়েবসহ তিনজন ধরা পড়লেও মাত্র ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। বাকি টাকা ফেরত না পাওয়ায় মনোজ কুমারের চিকিৎসা ভেস্তে যায় এবং দুশ্চিন্তায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অবন্তী কর চেকপোস্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।