চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী, দুর্ধর্ষ ‘শিবির ক্যাডার’ মো. সরওয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নগরীর বহদ্দারহাটে সহিংসতার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সরওয়ার।
শনিবার ভোর রাতে নগরীর বালুচড়া এলাকা থেকে চান্দগাঁও থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর বলেন, ‘বহদ্দারহাটে সহিংসতা, হত্যা, দাঙ্গা, পুলিশের ওপর এবং থানায় আক্রমণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আমরা সরওয়ারের নাম তদন্তে পেয়েছি। এর ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ও ১৯ জুলাই নগরীর বহদ্দারহাটে দফায় দফায় সংঘর্ষে তিন জন নিহত হন। দীর্ঘসময় মধ্যপ্রাচ্যে পলাতক থাকা সরওয়ার দেশে ফেরার পর বিপুল অস্ত্রসহ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতার হয়েছিল। পরে জামিনে বেরিয়ে আসে।
চট্টগ্রামের একসময়ের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের সহযোগী হিসেবে সরোয়ার ও তার সহযোগী ম্যাক্সন ছিল নগরীর মূর্তিমান আতঙ্ক। ২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ আট জনকে খুনের ঘটনায় দায়ের আলোচিত এইট মার্ডার মামলার আসামি ছিল সাজ্জাদ। ২০০১ সালের ৩ অক্টোবর গ্রেফতার হওয়া সাজ্জাদ বিএনপি সরকারের আমলে কারামুক্ত হয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যায়। তখন সাজ্জাদের অস্ত্রভাণ্ডারসহ অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নেয় সরওয়ার ও ম্যাক্সন।
২০১১ সালে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ দু’টি একে ৪৭ রাইফেলসহ সরোয়ার এবং ম্যাক্সনকে গ্রেফতার করে। ২০১৭ সালে কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে কাতারে চলে যায় সরোয়ার ও ম্যাক্সন। অপর দিকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুর আলম চৌধুরী মঞ্জুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাত ১১ টায় নগরের আকবর শাহ থানা এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আকবরশাহ্ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রব্বানী। মঞ্জুর আলম চৌধুরী মঞ্জুকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ মহানগর বিএনপির।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। মহানগর বিএনপির সাবেক সহ দপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, বিএনপি নেতা মঞ্জুর আলম চৌধুরী মঞ্জুকে বাসা থেকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। পরিবারের সকল সদস্যদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে সবাইকে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে রাখে।
তিনি আরও বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রামে বিএনপির ৩৭০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৮ টি মামলায় ৩৭ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে শুক্রবার (২৬ জুলাই) থেকে শনিবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত ২০ জন বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।