পাইকগাছার দেলুটির ভাঙন স্থানে বিকল্প রিংবাঁধ সম্পন্ন;
ঘুর্নিঝড় রেমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে খুলনার পাইকগাছায় লন্ডভন্ড দেলুটি’র তেলিখালী’তে পাউবো’র ভাঙন কবলিত স্থানে বিকল্প রিংবাঁধ দিয়ে পোল্ডারে লবন পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে।
ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ চন্দ্র ও সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামানের পরিদর্শনের পর শুক্রবার সকালে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ নাজমূল আহসান তেলিখালী’র ভাঙন কবলিত বেঁড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা মতে বর্ষ্যা মৌসুমের আগে সংশ্লিষ্টদের জরুরী ভাবে সবগুলো ভাঙন পয়েন্টে কাজ করার নির্দেশনা দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন,পানিউন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফ হোসেন,ওসি ওবাইদুর রহমান, দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডলসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তারা।
এদিকে প্লাবিত এলাকায় তিব্র খাবার পানির সংকট নিরশনে মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে বিনামূল্যে সুপেয় পানি সরবরাহ শুরু হয়েছে।
জানাগেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় প্রতিদিন ৭ ঘন্টা করে খাবার পানি সরবরাহ করবেন।
রেমালে’র আঘাতে জলোচ্ছ্বাসে লবন পানিতে প্লাবিত হয়ে বহু গ্রামের মানুষ তিব্র সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে।
তেলিখালী,হাটবাড়ী,কালিনগর,ফুলবাড়ী,গোপিপাগলা,গেউবুনিয়া চকরি-বকরিসহ ১২গ্রাম ও ২৩ নং পোল্ডারের সোলাদানা ইউপি’র ছালুবুনিয়া,খালিযারচক, আমুরকাটা,সোলাদানা, বয়ারঝাপা,দীর্ঘাসহ ২১গ্রাম ও লস্কর ইউপি’র করুলিয়া ও লস্কর,১৯/২০ পোল্ডারের লতা, হানি-মুনকিয়া,পুটিমারী,১০/১২ পোল্ডারের গড়ইখালীর অংশ বিশেষ । সরেজমিনে জানাগেছে, এসব এলাকায় স্নান ও গৃহস্থলীর কাজ ব্যবহৃত পানি ও সুপেয় খাবার পানির তিব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে লবন পানিতে প্লাবিত হয়ে মিষ্টি পানির উৎস্য পুকুর-খাল ও জলাশয় নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও মিষ্টি পানির মাছ ও শামুক,ঝিনুক জলজপ্রানী মরে দুর্ঘন্ধ ছড়াছে।
সোলাদানার আমুরকাটার বাসিন্দা সংবাদ কর্মী বি,সরকার জানান, ইউনিয়নের মানুষ ভীষন কষ্টে আছে। চিংড়ি চাষের কারনে এমনিতেই সুপেয় পানি সংকট আছে। এর পরেই ঘুর্নিঝড়ে বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে খাবর জলের সংকট আরো তিব্র হয়েছে।
লতা ইউপি চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাস জানান,এমনিতেই লতা সহ আশপাশ ইউনিয়নগুলো টিউবওয়ের সাকসেসফুল না। এ দুর্যোগে এলাকা প্লাবিত হয়ে পুটিমারী,লতাসহ কযেকটি গ্রামের মানুষের স্নান ও খাবার জলের সমস্যায় পড়েছে।
গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জি,এম আব্দুস সালাম কেরু বলেন,স্থানীয় আলমশাহী ইনস্টিটিউটের পুকুর থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে শিবসা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ সুপেয় পানি চাহিদা পূরন করছেন।
লস্করের দীপঙ্কর মন্ডল জানান,দুর্যোগে আমরা গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত পানি ও খাবার পানি কষ্টে আছি। আইলায় পোল্ডারে লবন জল ঢুকলেও গ্রাম বাসির একমাত্র ভরসা মিষ্টি পানির বড় দীঘি অক্ষত ছিল। কিন্তু রেমালে এ দীঘি প্লাবিত হয়ে তছনছ করে দিয়েছে। মাছ,শামুক-ঝিনুক মরে দুর্ঘন্ধ ছড়াছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহাদাৎ হুসাইন জানান,দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ দেলুটি,সোলাদানা ও গড়ইখালী ইউনিয়নে মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে প্রতি ঘন্টায় ৬৬০ লিটার করে বিনামূল্যে খাবার পানি বিতরণ কর্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি আরোও বলেন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে ইতোপুর্বে ১০ ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত ৩ হাজার লিটারের ৫ হাজার পানির ট্যাংকি বিতরন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান বলেন,উপকূলীয় লবনাক্ত এলাকায় সুপেয় পানির সংকট বিদ্যমান রয়েছে।
এর পরেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই সে সংকট আরো তিব্র হয়। এ অঞ্চলে লবন পানির চিংড়ি চাষ সুপেয় পানি সংকটের অন্যতম কারন বলে তিনি মনে করেন।
তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, সংসদ অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা পাইকগাছা-কয়রায় খাবার পানি সংকট নিরশনে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে উপকূলীয় এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমান জলাধার সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।