চুরির অভিযোগে ছাত্রকে
চুরির অভিযোগে মাদ্রাসার এক ছাত্রকে অমানবিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে । রাতের আঁধারে হাত-পা বেঁধে ২ ঘন্টাব্যাপি চলে বর্বোচিত অত্যাচার । এতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি শিক্ষকদ্বয় এরপরে দুই দিন তাকে আটকে রাখা হয় । পরে সুযোগবুঝে ছাত্র তাওহীদ পালিয়ে ফিরে আসে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে । হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে সে । পিতার মামলা দায়ের । এলাকাবাসীর দাবী কঠিন শাস্তি । এ ঘটনায় সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিতিমতো সমালোচনার ঝড় বইছে।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, তাওহীদ হোসেন বয়স মাত্র ৯ বছর । ঝিনাইদহরে শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিছানায় কাতরাচ্ছে সে । না পারছে শুতে, না পারছে বসতে । সারা শরীরে চরম অমানবিকভাবে পেটানোর ছাপ । শরীরের এমন কোন জায়গা নেই যে সেখানে দগদগে সেই ক্ষত চিহ্ন নেই । হুজুরের ঘড়ি চুরির অভিযোগে হাত-পা বেঁধে রাত ১০ থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে দুই শিক্ষকের পৈশাচিকতা । গত ২৭ মে হাটফাজিলপুর মুহাম্মাদিয়া মাদরাসায় ঘটে এ ঘটনা । এতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি শিক্ষক শিক্ষক মাহমুদ হাসান ও মাহাদী হাসান । তাকে আটকে রাখা হয় ঐ রুমেই পরের দুই দিন ।
তাওহীদ জানায়, এরপর কৌশলে তাওহীদ পালিয়ে বাঁচে মাদরাসা থেকে । সেখান থেকে প্রথমে যায় তার ফুফু বাড়ী । এরপর বাবা-মাকে খবর দিলে তারা তাকে ২৯মে শৈলকূপা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি কারে । তওহীদের বাবা গতকাল (৩০মে) দুই শিক্ষককে আসামী করে শৈলকূপা থানায় মামলা করলে পুলিশের তৎপরতায় আসামীদের গ্রেফতার করে ।
সে আরো বলে, আমি অনেক কাকুতি মিনতি করেছি কিন্তু তারা আমাকে ছাড়েনি । আমি চুরি করিনি ।
বাবা মান্নান বিশ্বাস জানান, বিচার ছাড়া কিছু চাই না । আমার ছেলে ঐ মাদরাসায় ৩ বছর পড়ে । কখনই তারা আমাকে এই ধরনের কথা বলেনি । আমার ৪ ছেলে মেয়ে তাদের এমন ঘটনার কোন রেকর্ড নেই । সবসময় শিক্ষকরা বলেছে ভালো ছেলে । ভালো করে পড়াশুনা করছে । কিন্তু তারা যে অভিযোগ এনেছে তা মিথ্যা ।
এলাকাবাসী জানান, এ নির্যাতনের সঠিক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ।
শৈলকুপা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডাঃ শোহেলি ইসলাম জানান, আগের চেয়ে রুগীর অবস্থা এখন অনেকটা উন্নতির দিকে ।
ঝিনাইদহ শৈলকূপা ওসি সফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় আমরা দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছি ।
মাদরাসা সূত্রে জানাযায়, ৩ বছর আগে পিতা-মাতা ঝিনাইদহের শৈলকুপার হাটফাজিলপুর মুহাম্মাদিয়া মাদ্রাসায় দিয়েছিল ইসলামিক শিক্ষায় বড় হবে সে । মাদরাসার বর্তমান ছাত্রের সংখ্যা ২শ ৫০এর বেশী । তবে বোডিং থাকে ১শ ছাত্র । মাদরাসাটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় । তাওহীদের বাড়ী একই উপজেলার রঘুনন্দনপুর গ্রামে । তার বাবা কৃষক ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।