Print

Rupantor Protidin

যশোরে রেলওয়ে সংযোগ সড়ক পথের সংযোগস্থলগুলো এখন মরণফাঁদ!

প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ২৩, ২০২৪ , ১০:৩৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৪, ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

Sheikh Kiron

যশোরে রেলওয়ে ও সড়ক পথের সংযোগস্থলগুলো মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সংযোগস্থলগুলো অতিক্রম করতে যেয়ে প্রতিনিয়ত ছোট-খাটো দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। সংযোগস্থলগুলোতে রেললাইনের পাতের সমান্তরাল রাস্তা না থাকায় দুর্ঘটনার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাইকেল ও মটরসাইকেলসহ দুই চাকার গাড়ির জন্য সমস্যাগুলো বেশি হচ্ছে। প্রায় প্রায়ই মটরসাইকেল চালকেরা এখান থেকে পড়ে যাচ্ছেন।

তাই ভুক্তভোগীদেরসহ সাধারণ মানুষের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সংযোগস্থলগুলোতে রেললাইনের পাতের সমান সড়কপথ করা প্রয়োজন। রেললাইন ও সড়কপথ সমান্তরাল বা সমান হলে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, যশোরে শহরের খড়কি, শংকরপুর, আরবপুর, ধর্মতলা, ক্যান্টনমেন্ট, খয়েরতলা ছাড়াও বসুন্দিয়া, নরেন্দ্রপুর, চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে সড়কপথের সাথে রেলপথের সংযোগস্থল রয়েছে। তার মধ্যে বেশিরভাগ স্থলে রেললাইনের পাত অনেক উঁচু আর সড়কপথ অনেক নিচুঁ। যার ফলে দুই চাকার গাড়ি চলাচলে বেশ অসুবিধা হয়। সাইকেলে পার হতে হলে অনেক জায়গায় হেঁটে ছাড়া সম্ভব হয় না। পরাপারে মটরসাইকেলের বেশ কষ্টকর। সাবধানতা অবলম্বন না করলে দুর্ঘটনার অন্ত নেই। পড়ে যেয়ে হাত-পা ভাঙ্গার ঘটনা এ নিত্য সংবাদ।

সংযোগস্থলগুলোর মধ্যে ভয়াবহ খারাপ অবস্থা মুজিব সড়কের সংযোগস্থল, আশ্রমরোডের সংযোগস্থল, ধর্মতলার সংযোগস্থল, খড়কি ধোপাড়া, বামনপাড়া, হাজামপাড়া, প্রাইমারি স্কুলের সংযোগস্থল, চুড়ামনকাটি-চৌগাছা সড়কের সংযোগস্থল, সাতমাইল বাজার থেকে শাহবাজপুর সড়কের সংযোগস্থল, বসুন্দিয়ায় জঙ্গলবাধল হাইস্কুলের সংযোগস্থল।

আব্দুর রহমান নামে একজন পথচারি বলেন, তার বাড়ি আরবপুর ইউনিয়নের খোলাডাঙ্গা গ্রামে। ধর্মতলা রোড়ে সংযোগস্থলটি খুবই খারাপ। সড়কপথ রেললাইনের পাতের থেকে অনেক নিঁচু। রেললাইনের পাশে খোয়া বিছানো রয়েছে সেগুলো সমানও করা হচ্ছে। সবমিলে রেললাইন ও সড়কপথ সমান না হওয়ায় যাতায়াতে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। চলাচলে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। রেল ও সড়ক কর্তৃপক্ষকে এদিকে নজর দেয়া প্রয়োজন।

রহিম মোল্লা নামে একজন বলেন, তার বাড়ি খড়কি প্রাইমারি স্কুলের পাশে। খড়কি ধোপাপাড়া, বামনপাড়া ও প্রাইমারি স্কুলের পাশে রেললাইন ও সড়কপথের সংযোগস্থলের বেহাল দশা। চলাচলের কোন উপায় নেই। এখানে রেলপথ অনেক উঁচু। সড়কপথ অনেক নিচু। সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে হলে হেঁটে যেতে হয়। মটরসাইকেল ও সাইকেল চালিয়ে রেলক্রসিং পার হওয়া বেশ কঠিন। মটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার কারণে এখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে।

জুম্মানা রহমান নামে এক মাইক্রো ড্রাইভার বলেন, সড়কপথ ও রেলওয়ের পাত সমান না থাকায় গাড়ি চালাতে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সাবধনতার সাথে গাড়ি চালাতে হয়। কোন রকম ভুল হলেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পড়তে হয়। এদিকে জরুরিভিত্তির কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া প্রয়োজন।

এ বিষয়ে যশোর অঞ্চলের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঘটনাটি সঠিক। যশোরের বিভিন্ন সড়কপথে রেললাইনের সংযোগস্থল মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। অত্যন্ত সাবধানভাবে সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে হয়। দুই চাকার গাড়ি জন্য আরো বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। প্রতিনিয়ত ওইসব স্থানে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকছে। রেল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার জন্য এগুলো হচ্ছে। তারা নিজেরাও কাজ করছে না। আমাদেরও কোন উদ্যোগ নিতে দিচ্ছে না। তবে, নিয়মে আছে রেলওয়ের ও সড়কেপথের সংযোগস্থলের দেখভালের দায়িত্ব রেল কর্তৃপক্ষের।

যশোর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান বলেন, রেলওয়ে ও সড়কপথের সংযোগস্থলগুলো নিয়মিত তদারকি করা হয়। রেলওয়ের যশোর অঞ্চলের সহকারি প্রকৌশলীর নেতৃত্বে তদারকি হয়। বিভিন্ন সংযোগস্থলে সমস্যা আছে। পর্যায়ক্রমে সেইসব স্থানে কাজ হবে।