Print

Rupantor Protidin

জাবির প্রশাসনিক ভবন দ্বিতীয় দিনের মতো অবরুদ্ধ

প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ১২, ২০২৪ , ৭:৩৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: মার্চ ১২, ২০২৪, ৭:৩৬ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল-হাসান ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ সাব্বির আলমের অব্যাহতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি চলছে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের ব্যানারে আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের চারটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনকারীরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে ফটকগুলোতে তালা ঝুলছে। এসময় কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।এদিকে সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মঞ্জুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ এবং বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহা সহ কয়েকজন কর্মকর্তা আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলতে আসেন। এসময় তারা ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে বাধার মুখে পড়েন এবং আলোচনার প্রস্তাব দেন। পরে স্থান ত্যাগ করেন।

আন্দোলনের ব্যাপারে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ মেঘ বলেন, “আমাদের পাঁচটা দাবি রয়েছে সে দবিগুলো না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রশাসন তাদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের এমন একটা মনোভাব যে প্রয়োজন প্রশাসনিক ভবন অচল হয়ে যাবে তবুও অপরাধী প্রক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।

“যে নিপীড়নের কারণে একজন শিক্ষক (মাহমুদুর রহমান জনি) বরখাস্ত করা হয়েছে সেই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীকে দায়মুক্তি পত্র লেখানোর অভিযোগ রয়েছে প্রক্টরের বিরুদ্ধে। তারপরও প্রক্টরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালীন রেজিস্ট্রার ভবনের ভেতরে আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি না। প্রয়োজনে অন্য কোথাও আলোচনা হতে পারে, সেখানে সন্তোষজনক সমাধান পেলে হয়তো আমরা কর্মসূচি নিয়ে ভাববো। এর বাইরে কোনো ধরনের বিবেচনা হবে না।”

গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে কৌশলে বোটানিক্যাল গার্ডেনে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, তার পরিচিত মামুনুর রশীদ মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগীর স্বামী ছয়জনকে আসামি করে ঘটনার রাতেই আশুলিয়া থানায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন’ আইনে মামলা করেন। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-ধর্ষক ও তার সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে গণরুম বিলুপ্ত করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা এবং র‌্যাগিং সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা; ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনা। এছাড়া নিপীড়কদের ‘সহায়তাকারী’ প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করা এবং তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক পদ থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে, জড়িতদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও রয়েছে আন্দোলনকারীদের।