Print

Rupantor Protidin

ঝিকরগাছায় স্বাক্ষর জাল করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ

প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩ , ৯:১৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩, ৯:১৬ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

যশোরের ঝিকরগাছায় কথিত ভূয়া ডাক্তার বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করে সরকারি লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া গ্রামের কথিত ভূয়া ডাক্তার বিল্লাল হোসেন নিজের ও তার মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে সরকারের সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের এ অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক অবগত হলে প্রশাসনের পক্ষ হতে ব্যাংক একাউন্টটি সাময়িক বন্ধ করা হয়।

এদিকে অর্থ আত্মসা এর বিষয়ে প্রশাসন অবগত হলেও সরকারি অর্থ ফেরৎ ও অভিযুক্তের প্রতি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে নিরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে। এতে করে তারা নিজেদের অপকর্ম ধামাচাপা দিতে একের পর এক অন্যায় করার সুযোগ পাচ্ছে বলে ধারণা করছে এলাকার সচেতন মহল।

এরই ধারাবাহিকতায় এবার সে নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রে পিতার নাম সংশোধনের জন্য প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে একটি প্রত্যয়ন পত্র নির্বাচন অফিসে জমা দিয়ে আবেদন করেছে। তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া গ্রামের তারা চাঁদ মন্ডলের ছেলে মোরশেদ আলী। বর্তমানে তিনি মৃত। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ১৬৪৫ নং এ নাম আছে বীর মুক্তিযোদ্ধা মশিয়র রহমান। তার পিতার নামও মৃত তাঁরা চাঁদ মন্ডল। এই তাঁরা চাঁদ মন্ডলকে কাজে লাগিয়ে মৃত মোরশেদকে মশিয়র বানিয়ে তার ওয়ারেশ সেজে বিল্লাল নিজের ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রে টেম্পারিং করে মোরশেদ আলীর স্থলে মশিয়ার রহমান করে বিভিন্ন দপ্তরে জমা প্রদান করে সরকারের মুক্তিযোদ্ধা ভাতার প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে।

গত বছর ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। চতুর বিল্লাল তখন নিজেকে বাঁচাতে তার নিজের ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতার নাম মোরশেদ আলীর স্থলে মশিয়ার রহমান করার জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে কিছু নকল কাগজপত্র দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন করেন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুল হকের হস্তক্ষেপে উপজেলা নির্বাচন অফিসার সেই আবেদনটি বাতিল করেন এবং সোনালী ব্যাংক, ঝিকরগাছা শাখা থেকে ভাতা উত্তোলনের (২৩৮০২৩০০৩২৪১) নং একাউন্ট বন্ধ করে দেন। যেটি অদ্যবধি বন্ধ আছে। সম্প্রতি আবারও বিল্লাল তার পিতার নাম সংশোধনের জন্য ২৯নং কুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ইদ্রিস আল মাহমুদকে না জানিয়ে গত ৩০ মে নিজেই ৫ম শ্রেণি পাশের একটি প্রত্যয়ন পত্র তৈরী করে জাল স্বাক্ষর করে নির্বাচন কমিশন বরাবর আবেদন করেছেন বলে বিশেষ সূত্রে জানা যায়। যদিও পূর্বে তার জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্যে এস এস সি পাশের সার্টিফিকেট দেওয়া আছে।

মঙ্গলবার তথ্য অনুসন্ধানে ২৯ নং কুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ ইদ্রিস আল মাহমুদের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি সংবাদকর্মীদের বলেন, প্যাড, প্রত্যয়ন পত্র ও স্বাক্ষরটা কোনোটাই আমার দেওয়া নয়। এগুলো সব জালিয়াতি করে তৈরি করা হয়েছে। আমি অচিরেই এই জালিয়াত কারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসেন বলেন, এধরনের কোনো কাজ কেউ করলে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কুলিয়া গ্রামের মোরশেদ আলীর ছেলে বিল্লাল হোসেনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।