Print

Rupantor Protidin

গাজায় নিহত ২০ হাজার , কী হবে এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ

প্রকাশিত হয়েছে: ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩ , ২:০৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩, ২:০৫ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলা থামছে না। মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়িঘর সব জায়গায় হামলা চালাচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। যাদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। গাজায় দুই মাস ধরে চলা ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় প্রায় ৫০ হাজার আহত হয়েছে। গাজায় ভয়াবহ এক সংকট তৈরি হয়েছে, যা নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। প্রথমে তারা গাজার উত্তরাংশে গাজা সিটি ও এর আশপাশের অন্যান্য এলাকায় অবিরাম বোমাবর্ষণ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তখন গাজার দক্ষিণাংশকে নিরাপদ ঘোষণা করে উত্তরাঞ্চলের প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণে চলে যেতে বলে। এর পর গাজা সিটিসহ গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে ইসরায়েলি বাহিনী। ব্যাপক প্রাণহানির মধ্যে গাজা সিটি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে স্থল অভিযান চালায়। এর পর কাতার ও মিসরের প্রচেষ্টায় ইসরায়েল এবং হামাস এক সপ্তাহের একটি অস্থায়ী মানবিক বিরতিতে সম্মত হয়ে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকে। ১ ডিসেম্বর বিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে থেকেই দুপক্ষের মধ্যে ফের সংঘাত শুরু হয়, যা এখনো চলছে।

ইসরায়েলি হামলায় প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে শিশু মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের উত্তাপ ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। বদলে দিচ্ছে রাজনীতি-কূটনীতির নানা হিসাব-নিকাশ। কী হবে এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ, তা নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের দামামা বাজছে। গোটা অঞ্চলেই উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে, সরগরম রাজনীতির অঙ্গন। কোনো কূটনৈতিক তৎপরতাই সংঘাত বন্ধে কাজে আসেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন বন্ধে পাঁচটি সুপারিশ পেশ করেছেন। ৯ নভেম্বর রিয়াদে অনুষ্ঠিত অষ্টম বিশেষ ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি এ পরামর্শ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের একতরফা যুদ্ধ বন্ধে অবিলম্বে ‘যুদ্ধ বিরতির’ আহ্বান জানানো দরকার। এই যুদ্ধ অন্যায্য এবং এটি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নির্মম লঙ্ঘন। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা জ্বলছে এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েল কোনো বিরতি ছাড়াই নির্দয় তাণ্ডব চালাচ্ছে, হাসপাতাল ও বেসামরিক অবকাঠামোতে বোমাবর্ষণ করছে। বিধ্বস্ত গাজার আটকেপড়া বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী উপকরণের অবিচ্ছিন্ন, দ্রুত এবং নিরাপদ সরবরাহের জন্য অবিলম্বে একটি মানবিক করিডোর খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সুপারিশ করেছেন। বিশ্বনেতারা প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে পারে। তুরস্ক, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশসহ সব রাষ্ট্রই ফিলিস্তিনি সমস্যার একটি দ্বিরাষ্ট্রকেন্দ্রিক সমাধানের কথা বলেছে, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতেও এটিকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি ও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠা ছাড়া এ যুদ্ধ ও সংঘাতের অবসান ঘটবে না। এ ক্ষেত্রে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই একমাত্র পথ। যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করে শান্তি আলোচনা শুরু করা জরুরি বলে মনে করছি।