Print

Rupantor Protidin

‘ভুঁইয়ত গেইলে কলিজা ছ্যাদ করে উঠে বাহে’

প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩ , ২:০৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩, ২:০৯ অপরাহ্ণ

রুপান্তর প্রতিদিন ডেস্ক

‘বানের পানিত মোর ধানের গাছগুলা ভত্তা বানে গেইল বাহে। ভুঁইয়ত গেইলে মোর কলিজা ছ্যাদ করে উঠে। বড় আশা করি রোওয়া, বানের পানি আসিল, সেই গাছ মোর সুতি গেইছে। এ্যালা ভুঁইত থাকি গাছ উঠে না। অসময়ে এ্যালা বিছন কোন্টে পাং। মুই সেই চিন্তায় বাচং না বাহে।’ আঞ্চলিক ভাষায় কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ মিয়া।

শুধু মজিদ নন, তিন দফা বন্যায় উপজেলায় কৃষকের অন্তত ৩৫০ হেক্টর রোপা আমন ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ফলে নতুন বীজতলা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন কৃষক। জলাবদ্ধতার কারণে রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে লোকালয়েও নদীর পানি চলে এসেছে। সঙ্গে এসেছে বিপুল পরিমাণ বালু। দ্রুত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমন ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে কৃষকদের মধ্যে এখন হাহাকার।

খোঁজ নিয়ে ও সরেজমিন জানা গেছে, ধরলা নদীর তীরবর্তী অনেক আমন ক্ষেত বালুর নিচে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থায় থাকায় উদ্বেগে রয়েছেন কৃষক। পানিতে তলিয়ে থাকা ক্ষেতে নতুন করে চারা রোপণের পরিকল্পনা থাকলেও বীজতলার অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে আমন ফসল ঘরে উঠবে কিনা, তা নিয়ে সবাই শঙ্কায় রয়েছেন।

বড়ভিটা ইউনিয়নের নাও খেলার দোলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ইউসুফ আলী ও খলিল মিয়া জানান, বন্যার পানিতে ডুবে তাদের দেড় বিঘা করে জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। একই কথা বলেন ফুলবাড়ী ইউনিয়নের চিনাবাড়ী এলাকার লাল মিয়া ও চাঁদ মিয়া। তারা জানান, নতুন বীজতলার অভাবে নতুন করে ধান লাগানো নিয়ে বিপদে আছেন। বীজ পাওয়া গেলেও দাম চড়া। অসময়ে ফের আমন ধান চাষ করবেন কিনা, তা ভাবছেন তারা। বড়ভিটা ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু বলেন, কয়েক দফা বন্যায় বড়ভিটায় বেশি আবাদি জমির ক্ষতি হয়েছে। যেখানে সেখানে মাটি উঁচু করে ঘরবাড়ি করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জমির পানি বের হতে পারছে না। তবে পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, চলতি মৌসুমে ১১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। তবে বন্যায় অন্তত ১৩৫ হেক্টর ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলো পতিত না রেখে নতুন করে চারা রোপণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।