যশোর সরকারি এম এম কলেজের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমানের হুমকিতে আতংকিত হয়ে দিন পার করছেন সাধারণ শিক্ষক-কর্মকর্তা। বিদয়ের দিনে তিনি কলেজের কয়েক শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি করার হুমকি দেন। যার ফলে, শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরণের চাপা আতংক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, চলতি মাসের গত ১৬ তারিখে অধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমানের অবসরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চাকরি জীবনের শেষ বিদয়ের অধ্যক্ষ শিক্ষকদের ছোট করে বিভিন্ন ধরণের বক্তব্য দেন। সাধারণ শিক্ষকদের বদলি করারও হুমকি দেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমি মোনাফেক হতে চাই না। কাফের হতে চাই। মোনাফেকরা সবার সাথে সুসম্পর্ক রেখে চলে তারা ভাল না। কাফেররা ভাল। এছাড়াও তিনি রুপক অর্থে উদাহরণ টেনে নিজেকে তীর্থযাত্রী হিসেবে ও সহকর্মী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কুকুরের সাথে তুলনা করেন। এ ঘটনার পর শিক্ষক-কর্মকর্তারা ঘৃর্ণায় ওইদিন অধ্যক্ষের সাথে কেউ কথা কোন কথা বলেননি। অনেকটা নিরবে এক এক অধ্যক্ষকে বিদায় নিতে হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তিনি একধিক শিক্ষক-কর্মকর্তাকে তার রুমে ডেকে বান্দরবন, খাগড়াছড়িতে বদলি করার হুমকি দেন। কলেজের বেসরকারি কর্মচারিদের অবসরকালীন দুই লাখ টাকা দেয়ার বিষয়টিও বন্ধ করে দিয়ে গেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
তবে, একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ অধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমানের কোন শিক্ষকই ভাল না। একমাত্র তার বিশ^বিদ্যালয় জীবনের ঘনিষ্ট বাংলা বিভাগের প্রফেসর আকতার হোসেন ভাল। আকতার হোসেনকে কলেজের প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বদলির হুমকি দিয়েছেন ও শিক্ষকদের ছোট করে বক্তব্য দিয়েছেন। আকতার হোসেনের বাড়ি মূলত চৌগাছার বল্লবপুর মাকাপুর গ্রামে। তিনি বসবাস করেন ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের পৌরসভার মধ্যে। তিনি শ^শুরবাড়িতে থাকেন। ঝিনাইদহ উপজেলার কালিগঞ্জে আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাফিয়া ডন আনোয়ারুল আজীম আনারের বড় ভাইয়া। আনারের দাপটে আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৭ বছরে ধরাকে সরাজ্ঞান করেননি। একমাত্র আকতার ছাড়া সব শিক্ষক তার বদলি আতংকে দিন পার করছেন।
কয়েকজন বেসরকারি কর্মচারি বলেন, কলেজে ৯০ জন সেবরকারি কর্মচারি রয়েছে। শুনেছি তাদের অবসরকালীন সুবিধা অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা এখনও চিঠি পাননি। চিঠি পেলে তারা পদক্ষেপ নেবেন।
কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদয়ী অধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমান তার বিদয়ের দিনে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে করে বদলির কথা বলেছেন। ঘটনাটি সঠিক। তার বিদয় অনুষ্ঠানে তিনি সভাপতিত্ব করেন।