Print

Rupantor Protidin

মণিরামপুরে মেয়ের ঘাতক বাবা’ জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি!

প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫ , ৫:৫০ অপরাহ্ণ | আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ৫:৫০ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

চলতি মাসের গত ৮ তারিখে ভোরবেলা মনিরামপুরের রোহিতা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা  মিজানুর রহমানের বাড়ির পুকুর থেকে ১৩ বছর বয়সী মাদ্রাসা পড়ুয়া (মাহমুদা) কিশোরীর বিবস্ত্র মরদেহ পাওয়া গিয়েছিল তার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মেয়েটির বাবা মাওলানা আইনুল হক নিজে-ই মেয়েকে রুটি চুরির অপরাধে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে পুলিশ ও আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মণিরামপুর থানা তথ্য মিডিয়া সেল। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আদালতে তিনি জবানবন্দী দিলে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
‎আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ঘটনার (৮ই সেপৃটঃ) দিন দুপুরে রুটি চুরির কথা শুনে দোকানদারের সামনে মেয়েটিকে তার মা জুতা দিয়ে মারেন।সে সময় মেয়েটির ঘাতক পিতা আয়নুল  মসজিদে নামাজ পড়াতে যাচ্ছিলেন। পরে তিনি ফিরে এসে মেয়েকে মারপিট করার এক পর্যায়ে গলাটিপে ধরলে মেয়েটি মারা যায়। তখন মরদেহ গোপন করে রেখে রাতে এশার নামাজের পর তিনি সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের পুকুরে মরদেহ ফেলে দেন।
‎পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ের মরদেহ পা ধরে পানিতে নিক্ষেপ করার সময় মেয়ের পায়জামা খুলে বাবার হাতে থেকে যায়। পরে তিনি পায়জামা ও ওড়না পুকুরে ফেলে দেন।
‎এদিকে গত ১২ সেপ্টেম্বর মেয়েকে ধ*র্ষ*ণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা করেছিলেন। তখন মেয়েটির বাবা সাথে ছিলেন। এরপর পুলিশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন তথ্য পায়নি। কিন্তু গত ৩-৪ ধরে মেয়েটির বাবা আত্মগোপনে চলে গেলে পুলিশের সন্দেহ বাড়ে। পরে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আয়নুল হককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি পুলিশের কাছে মেয়েকে হ*ত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
‎মৃতের বাবার করা মামলা থেকে ধর্ষণের ধারা বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মণিরামপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ বাবলুর রহমান খান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আপনারা সঠিক সংবাদ প্রচার করুন, প্রশাসনকে একটু সময় দিন। অপরাধী যেই হোক পুলিশ তাকে খুঁজে সামনে আনবে।
এদিকে একাধিক গণমাধ্যমে মেয়ের বাবার স্বীকারোক্তির আগে করা নিউজের প্রেক্ষিতে সোস্যাল মিডিয়ায় ও জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মণিরামপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুলাহ আল মামুন তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেছেন- বাবাই যদি মেয়েকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিবে। তাহলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণ কথা কিভাবে আসে? এবিষয়ে প্রথমে নিউজ হয়েছিল রুটি চুরির অপরাধে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে মারধর, পুকুরে মিললো লাশ। পরে নিউজ হয়েছে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। এখন শুনছি বাবা নিজেই হত্যাকারী। বিষয়টি আমাকে অবাক করে তুলেছে।
সাংবাদিকের এমন পোস্টে মণিরামপুরের একাধিক লোক একেকভাবে মন্তব্য করেছেন। যেখানে অধিকাংশ মন্তব্যই মেয়ের বাবাকে ফাঁসানো হয়েছে, তিনি অপরাধী না! একজন বাবা তার মেয়ের সাথে এমন করতে পারে না, আরও তিনি একজন ধর্মপরায়ণ মাওলানা-এমন বোঝানো হয়েছে।
তাহলে কি ঘটনার অন্তরালে লুকিয়ে আছে অন্য কোন ঘটনা? বিষয় টা খতিয়ে দেখার অনুরোধ করছেন সচেতন মহল।