Print

Rupantor Protidin

জুলাই সনদ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত বৈঠক, কোনো অগ্রগতি হয়নি

প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ৩০, ২০২৫ , ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ | আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২৫, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ

Sheikh Kiron

জুলাই সনদ নিয়ে মতপার্থক্য কমাতে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও তা থেকে কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি আসেনি। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর মন্ত্রিপাড়ায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে দু’দলের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে বিকেলে জামায়াত ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, এবি পার্টি ও খেলাফত মজলিসের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে এসব দল স্পষ্ট জানায়, জুলাই সনদ ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে তারা যৌথ আন্দোলনে নামবে বলেও সংকল্প ব্যক্ত করে।

সূত্র জানায়, বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে তাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। অন্যদিকে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ডা. হামিদুর রহমান আযাদ। আলোচনায় বিএনপি জানায়, তারা পূর্বের অবস্থান থেকে সরে আসবে না। বিশেষ করে ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন (পিআর) পদ্ধতি ও নির্বাচনের আগে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে বিএনপি অনড় থাকে।

অন্যদিকে জামায়াতের দাবি, জুলাই সনদ নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করতে হবে। সংবিধানের ওপর সনদের প্রাধান্য থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে গণভোট বা বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে তা কার্যকর করতে হবে। কিন্তু বিএনপি এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। তাদের অবস্থান হলো—সংবিধানের ওপরে কিছুই প্রাধান্য পেতে পারে না, আর গণভোট বা বিশেষ আদেশ টেকসই সমাধান নয়।

রাজনৈতিক সূত্র বলছে, বৈঠক কোনো সমঝোতা তৈরি করতে ব্যর্থ হলেও জামায়াত এখন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী। তাদের বিশ্বাস, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দীর্ঘ সময় রাজনীতি করার অভিজ্ঞতার কারণে তিনিই সনদ বাস্তবায়নের গুরুত্ব বুঝতে পারবেন।

অন্যদিকে, এর আগে সাত দলের বৈঠকেও সনদের অধীনে নির্বাচনের দাবি জোরালো করা হয়। জামায়াতের পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি, এবি পার্টি ও খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানা হবে না। তবে নির্বাচনের সময় নিয়ে আপত্তি নেই, শুধু রমজানের আগেই ভোট হলে তারা রাজি।

এ বিষয়ে জামায়াতের ডা. তাহের বলেন, যারা ভোটের আগে সংস্কার চায় না, তারাই আসলে নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চাইছে। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সংবিধান সংশোধনের মতো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে নির্বাচনের পর, ক্ষমতায় গেলে।

সব মিলিয়ে, জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য আরও তীব্র হয়েছে। বিএনপি যেখানে সংবিধানের প্রতি অনড়, সেখানে জামায়াত চাইছে সনদের প্রাধান্য। ফলে সমঝোতার বদলে বিরোধ আরও স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।