Print

Rupantor Protidin

সবজির বাজার চড়া, বাড়ল আটা-ময়দা ও ডালের দাম

প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ২৯, ২০২৫ , ১:১৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২৫, ১:১৩ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

সরবরাহ ভালো থাকলেও প্রায় ২ মাসের বেশি সময় ধরে নানা অজুহাতে বাজারে অতিরিক্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। কিছুতেই দাম ক্রেতাদের নাগালে আসছে না, কেবল কাঁচা পেঁপে আর আলু ছাড়া সব সবজিই ৮০ থেকে ১০০ টাকার ঘরে। তার সঙ্গে এবার ক্রেতাদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে আটা, ময়দা ও মসুর ডাল। গত দুই সপ্তাহে কেজিতে আটা-ময়দা ও ডালের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- বাজারে প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, প্রতি কেজি করলো ১০০ টাকা, প্রতি কেজি বেগুন (গোল) ১২০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ধন্দুল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, প্রতি কেজি বেগুন (লম্বা)  ৮০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ২৫ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকা এবং প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।

এছাড়াও প্রতি আঁটি পুঁইশাক ৫০-৬০ টাকা, ডাটাশাক ২০-৩০, কলমি শাক ২০ টাকা পর্যন্ত, লাল শাক ২৫-৩০, লাউশাক ৪০-৬০, পাটশাক ২০-২৫ এবং কচুশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজ আমদানি বাড়লেও বাজারে দাম তেমন কমেনি। এখনো প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে।

এছাড়া উচ্চমূল্যে আটকে রয়েছে ডিম ও মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকার মধ্যে। যেখানে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহেও একই দামে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে মুরগির প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকা দরে।

এদিকে বাজারে খোলা আটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় কেজিতে, যা আগে ছিল ৪০-৪২ টাকা। প্যাকেটজাত আটার দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০ টাকায়। আর খোলা ময়দা এখন ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আগে যা ছিল ৫০ টাকা। প্যাকেটজাত ময়দা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৩০ টাকা।

ডালের বাজারেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ছোট দানার মসুর কেজিতে বেড়েছে ২০-২৫ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। মোটা দানার মসুরও বেড়েছে ৫-১০ টাকা, এখন এটি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

সবজির দাম বিষয়ে জামাল মিয়া বলেন, বর্তমানে সবজির যে দাম এতে করে আধা কেজি বা আড়াই’শ গ্রাম করে সবজি কিনতে হচ্ছে। বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। শুধুমাত্র আলু আর কাঁচা পেঁপের দাম কম। এত বেশি দাম থাকলে আমাদের মত সাধারণ ক্রেতারা কীভাবে সবজি কিনে খাবে?

রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা আলামিন বলেন, বাজারে সবজির দাম বাড়তিই যাচ্ছে। দাম বাড়তি থাকায় আমাদের ব্যবসায় ধস নেমেছে। ক্রেতারা এখন আর বেশি সবজি কিনছে না। আগে যেখানে এক আইটেম সবজি ১৫-২০ কেজি করে আনতাম, এখন সেসব সবজিই ৪-৫ কেজি করে এনেও বিক্রি করতে পারছি না।

এদিকে মুদি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আটা ও ময়দার সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। আটা ও ময়দার কিছুটা সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। নতুন প্যাকেটের স্টক এখনও তেমন একটা বাজারে আসেনি। ফলে দাম কিছুটা বেড়েছে। আমরা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি কমায় বাজারে দাম বাড়ছে ডালের। ছোট দানার মসুর ডালের দাম বেড়েছে বেশি। মোটা দানার ডালের দামও বেড়েছে। ফলে আমাদেরও দাম বাড়াতে হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের বোঝার চেষ্টা করছি।

আরিফুল নামে এক ক্রেতা বলেন, আটা-ময়দা ও ডাল কিনতে এসে দেখি দাম অনেক বেড়ে গেছে। পরিবারে দৈনন্দিন খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।