সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর ইউনিয়নের উত্তর হাজীপুর গ্রামে জমির ধান চারা চুরির প্রতিবাদ করায় রবিউল ইসলাম (৪০) নামের এক কৃষক ছুরিকাহত হয়েছেন। বুধবার (৬ আগস্ট) রাত ৮টা ১০ মিনিটে হাজীপুর রোডের সাধুর চা দোকানের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় রবিউলকে স্থানীয়রা শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষক রবিউল ইসলাম ও তার প্রতিবেশী শফিকুল শেখ মিলে এক বিঘা জমিতে ধান চাষের জন্য চারা প্রস্তুত করেন। কিন্তু সকালে জমিতে গিয়ে দেখতে পান, চারাগুলো চুরি হয়ে গেছে। পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, আলাউদ্দিন, সাজ্জাদ ও হান্নান নামের তিন ব্যক্তি সেই চারা করিম মোড়লের কাছে বিক্রি করেছেন এবং করিমের জমিতে রোপণও করা হয়েছে।
চারা চুরির বিষয়টি জানতে চাওয়ায় অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। করিম মোড়ল বলেন, তিনি কিছু না জেনেই টাকা দিয়ে চারা কিনেছেন এবং তার জমিতে তা রোপণ করা হয়েছে। এরপর বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে রবিউল ও শফিকুল স্থানীয় ইউপি সদস্য মোবারক হোসেন মন্টুর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি সন্ধ্যায় আসতে বললে দুই কৃষক হাজীপুর রোডের চায়ের দোকানে অপেক্ষা করছিলেন।
এ সময় আলাউদ্দিন গাজীর ছেলে আসাদ আলি (৪০), তার ছেলে রানা (১৮), নুর আলী সরদারের ছেলে হান্নান (৪৩) ও তার ছেলে হাসান (১৫) সেখানে এসে দু’জন কৃষকের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে রানা পকেট থেকে ছুরি বের করে রবিউল ইসলামের পিঠে আঘাত করে।
রক্তাক্ত অবস্থায় রবিউলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রবিউলের স্ত্রী জানান, ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে রানা তাদের পথরোধ করে বলে, “এই তিনজনকেও শেষ করে দিই।” আতঙ্কে তারা পালিয়ে যান।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রানা ও হাসান দীর্ঘদিন ধরে নানা অপরাধে জড়িত, কিন্তু বারবার আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।” রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ রানা ও হাসানকে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এলাকাবাসী অবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।