জুলাই-আগস্টে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সহিংসতা ও অরাজকতার মধ্যে পুলিশের বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়। এখনও পর্যন্ত ১৩৯০টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ২ লাখ ৫৭ হাজারেরও বেশি গোলাবারুদের কোনো হদিস নেই। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং প্রশাসনের মধ্যে।
২০২৫ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় ৪৬০টি থানায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়। শুধু থানাই নয়, ১১৪টি পুলিশ ফাঁড়ি ও স্থাপনায়ও চালানো হয় হামলা। ঢাকায় ১৩টি থানায় আক্রমণ হয়। এসব হামলার সময় অসংখ্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করে নেয়া হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশজুড়ে ৫৭৫৩টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৬ লাখ ৫১ হাজার ৮৩৭টি গোলাবারুদ লুট হয়। এর মধ্যে উদ্ধার করা গেছে ৪৩৯০টি অস্ত্র এবং ৩ লাখ ৯৪ হাজার ১১২টি গুলি ও গ্রেনেড। ফলে এখনও ১৩৯০টি অস্ত্র ও ২ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৫টি গোলাবারুদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এসব অস্ত্র এখন অপরাধীদের হাতে চলে গেছে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই অস্ত্র ও গোলাবারুদ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী বলেন,
“এত বিপুল সংখ্যক অস্ত্র ও গুলি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তখন নির্বাচন নিরাপদ রাখা নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।”
![]()
![]()
তথ্য অনুযায়ী, শুধু ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকেই লুট হয় ১৮৯৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় ৩ লাখ রাউন্ড গুলি। এর মধ্যে এখনো উদ্ধার হয়নি ৬৬০টি অস্ত্র ও ১ লাখ গুলি।
এছাড়াও, গণভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসএসএফ সদস্যদের কাছ থেকেও ট্যাকটিক্যাল গিয়ার, অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়ে যায়। এমনকি জাতীয় সংসদ ভবন থেকে মজুদ থাকা অস্ত্রও খোয়া যায় বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই অস্ত্র ও গুলির অনেকাংশ এখন অপরাধী চক্র বা রাজনৈতিক দাঙ্গাবাজদের হাতে থাকতে পারে। এতে নির্বাচনের সময় সহিংসতা ও সন্ত্রাস বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।