Print

Rupantor Protidin

‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদাবাজি, রিকশাচালকের ছেলে রিয়াদ আজ বিলাসবহুল জীবনে!

প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২৮, ২০২৫ , ৬:২৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: জুলাই ২৮, ২০২৫, ৬:২৩ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

রাজধানীর গুলশানে গত শনিবার সন্ধ্যায় সাবেক সংরক্ষিত আসনের এক নারী সংসদ সদস্যের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের সময় চার সহযোগীসহ হাতেনাতে ধরা পড়েন আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর তাকে সংগঠনের দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।

রিয়াদের হঠাৎ উত্থান নিয়ে এলাকায় তৈরি হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার বাবা ছিলেন একজন রিকশাচালক, বর্তমানে দিনমজুর। মাত্র এক বছর আগেও পরিবারটি আর্থিক কষ্টে দিন কাটাত। অথচ হঠাৎ করেই তাদের ঘরবাড়ি বদলে যায় — শুরু হয় দালান নির্মাণ, কেনা হয় দামি গাড়ি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রিয়াদ নবীপুর হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে কোম্পানীগঞ্জ সরকারি কলেজে পড়েন এবং পরে ঢাকায় এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিনি প্রথমে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন ও পরে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। সেখান থেকেই নিজেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতা হিসেবে পরিচিত করে তোলেন।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। রিয়াদের ফেসবুক ঘাঁটলে দেখা যায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে তোলা একাধিক ছবি পোস্ট করেছেন তিনি।

রিয়াদের মা সামসুন্নাহার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমরা অভাবে ছেলেকে শহরে পড়তে পাঠিয়েছিলাম। এখন টিভিতে দেখি পুলিশ ওকে ধরেছে। বিশ্বাস করতে পারছি না।”

গ্রামের সাবেক স্কুল সভাপতি শিহাব উদ্দিন বলেন, “এই ছেলেকে সবাই মিলে সাহায্য করে পড়াশোনা করিয়েছি। সে কীভাবে এমন ভয়ংকর পথে গেল— ভাবতেই কষ্ট হয়।”

এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন তুলেছে— এমন ‘সমন্বয়ক মুখোশধারী’ রিয়াদরা আরও আছে কিনা? এবং তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।