আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের তারিখ প্রকাশ করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল শনিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এই তথ্য জানান। সেখানে দেশের ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি।
জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন যে, আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই তিনি নির্বাচন আয়োজনের সময়সূচি ঘোষণা করবেন।”
এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ জানান, বেশিরভাগ দলের পক্ষ থেকেই দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন বলে মত দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের রোডম্যাপ চূড়ান্ত হয়েছে, শুধু নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা বাকি। কয়েক দিনের মধ্যেই সেটি জানানো হবে।”
প্রেস উইং সূত্রে জানা গেছে, যদিও বৈঠকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচনের দিনক্ষণ সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য উল্লেখ করা হয়নি, তবে সরকারপ্রধান ‘কয়েক দিনের মধ্যে’ তারিখ ঘোষণার কথা বলেছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রস্তুতির সময় ‘পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি’ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তিনি বলেন, “এসব অপচেষ্টা প্রতিহত করতে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের সুষ্ঠু আয়োজন যদি না করা যায়, তাহলে বড় সুযোগ হারিয়ে যাবে। ষড়যন্ত্র করে কোনোভাবেই গণতন্ত্রকে থামানো যাবে না।”
ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তিন-চার দিনের মধ্যেই তিনি নির্বাচনের তারিখ জানাবেন।”
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানও একই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মাসুদ রানা বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন যে, নির্বাচনের দিন ঘোষণা করবেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে।”
জাতীয় গণফ্রন্টের আমিনুল হক টিপু প্রধান উপদেষ্টাকে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট অনুষ্ঠানের পরামর্শ দিয়েছেন।
এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান বলেন, “নির্বাচিত সরকার ছাড়া আইনশৃঙ্খলা ফিরবে না।”
একইদিনে হেফাজতে ইসলামের একটি প্রতিনিধি দলও যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সেখানে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর ঘটনার ক্ষতিপূরণ, মামলার প্রত্যাহার ও জাতিসংঘের মাধ্যমে তদন্তের দাবি জানানো হয়।
এই বৈঠকে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা মামুনুল হকসহ শীর্ষস্থানীয় আলেমরা উপস্থিত ছিলেন।