রাজধানীর বিমানবন্দর ও দক্ষিণখানের কিছু অংশ ঘিরে গড়ে ওঠা একটি মার্কেট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে, সিভিল এভিয়েশনের মালিকানাধীন জায়গায় নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটটি এখন অবৈধ দখল ও চাঁদাবাজির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১০ বছরের লিজে মার্কেটটি বরাদ্দ দিয়েছিল সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০১২ সালে লিজের মেয়াদ শেষ হলে এক বছরের জন্য পুনরায় নবায়ন করা হয়। কিন্তু ২০১৩ সালে মুক্তিযোদ্ধারা জায়গা ছেড়ে দেওয়ার পর, জাতীয় পার্টির স্থানীয় কিছু নেতা ও প্রভাবশালীরা মার্কেটটি জোরপূর্বক দখল করে নেন।
স্থানীয়রা জানান, জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নয়ন, আবুল, অ্যাডভোকেট জামাল, ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আজাদসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেন। এরপর থেকে তারা নিজেরাই অবৈধভাবে দোকানের পজিশন তৈরি করে বিক্রি করতে থাকেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে—মার্কেটের নিচতলায় রয়েছে কাঁচাবাজার, মাছ ও মুরগির দোকান, এবং কাঁচা মালের অস্থায়ী স্টল। এইসব দোকান থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ লক্ষ টাকার ওপরে চাঁদা আদায় করা হয়। এমনকি কাঁচাবাজারের পাশেই তৈরি করা হয়েছে জাতীয় পার্টির একটি অফিস।
মার্কেটের চারদিকে গড়ে ওঠা ছোট ছোট দোকানের পজিশন বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা জামানত আদায় করা হয়েছে। একজন মশলা ব্যবসায়ী জানান, তিনি ৭ লক্ষ টাকা জামানত দিয়ে একটি পজিশন কিনেছেন এবং মাসে ১৭ হাজার টাকা ভাড়া দিচ্ছেন।
প্রায় ৪ তলা বিশিষ্ট এই মার্কেটটিতে বর্তমানে আনুমানিক ৩৫০টিরও বেশি দোকান রয়েছে। এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন, “সরকারি জায়গায় কীভাবে এভাবে অবৈধভাবে চাঁদা তোলা হচ্ছে এবং কোটি টাকা লেনদেন চলছে—এর পেছনে কারা?”
এই অনিয়মের বিরুদ্ধে রুহুল আমিন নামের এক ব্যক্তি গত ১০ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া, বিমানবন্দর থানাকে বিষয়টি অবহিত করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি।