Print

Rupantor Protidin

ইবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্ত শুরু, তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২০, ২০২৫ , ৬:৩১ অপরাহ্ণ | আপডেট: জুলাই ২০, ২০২৫, ৬:৩১ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পুকুর থেকে সাজিদ আব্দুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটির প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত তৎপরতা শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষ। রোববার (২০ জুলাই) প্রশাসনের পক্ষ থেকে উন্মুক্ত গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য-উপাত্ত আহ্বান করা হয়। তদন্ত কমিটির সদস্যরা এরইমধ্যে সংশ্লিষ্ট ২৫ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন।

শনিবার কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তদন্ত কমিটির পাশাপাশি পুলিশও তদন্তে যুক্ত রয়েছে। সাজিদের কক্ষ এবং ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ইতোমধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তদন্তের অগ্রগতি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটির সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সুরতহাল প্রতিবেদন তাদের হাতে পৌঁছেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ থেকে কললিস্টের রেকর্ড এবং আইসিটি সেলের কাছ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সোমবারের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে এবং ফরেনসিক প্রতিবেদন এক সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যাশিত।

হল তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুল গফুর গাজী জানান, “আমরা এখন পর্যন্ত ৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট প্রস্তুত করতে পারবো বলে আশা করছি।”

শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলন

শুক্রবার ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা বিক্ষোভ করে ১৫ দফা দাবি পেশ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো—

  • ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ

  • ৬ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ

  • তদন্ত কমিটিতে দুইজন শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত করা

  • নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন আপাতত স্থগিত করা হলেও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন—৬ দিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন।

শোক কর্মসূচি ও প্রশাসনের অবস্থান
রোববার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একদিনের শোক দিবস পালন করে। এর অংশ হিসেবে পতাকা অর্ধনমিত করা হয়, দোয়া মাহফিল, কালো ব্যাজ ধারণ, এবং শোক র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়। আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শোক র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।

উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, “তদন্তে কোন গাফিলতি রাখা হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও দাবিগুলো বাস্তবায়নে কাজ চলছে।”

তবে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন জানিয়েছেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ এটি সময়সাপেক্ষ। এছাড়া তদন্ত কমিটিতে শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে এখনো প্রশাসনের কোনো নোটিশ পাওয়া যায়নি।”

প্রসঙ্গত
গত ১৮ জুলাই, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫:৩০ মিনিটে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরে আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র সাজিদ আব্দুল্লাহর লাশ ভেসে থাকতে দেখা যায়। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।