বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান শারমিন আহমদ ও সোহেল তাজ আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই, ২০২৫) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি ছবিসহ এই সাক্ষাতের তথ্য জানিয়েছেন।
সাক্ষাতের রাজনৈতিক তাৎপর্য: তাজউদ্দীন আহমদের সন্তানদের এমন এক সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে দেখা করাকে রাজনৈতিক মহলে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষত যখন তাদের পিতা তাজউদ্দীন আহমদের দল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে এবং গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে।
সোহেল তাজ ও শারমিন আহমদের অতীত: সোহেল তাজ নবম জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনার সরকারে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন, কিন্তু পূর্ণকালীন দায়িত্বে থাকতে পারেননি এবং পদত্যাগ করেছিলেন। তখন থেকেই শেখ পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো না যাওয়ার নানা ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, তাজউদ্দীন আহমদের জ্যেষ্ঠ কন্যা শারমিন আহমদ নানা সময়ে শেখ পরিবারের সমালোচনা করে এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই লেখক ও গবেষক তার কয়েকটি বই, যেমন: ‘তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা’ এবং ‘৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর’, এর মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে বেশ আলোচনায় আসেন। চব্বিশের শেষ দিকে একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
সোহেল তাজের বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্ট: এদিকে, আজ দুপুরে সোহেল তাজ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি বিস্ফোরক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “গতকাল গোপালগঞ্জে যে হামলা হয়েছে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জুলাই-অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানের (নাহিদ, সারজিস, হাসনাত, জারা) নেতাদের হত্যার একটি হীন চেষ্টা। আমি আশ্চর্য হবো না যদি ডেভিল রানী নিজেই এর নির্দেশ দিয়ে থাকেন।” তার এই মন্তব্য নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
এই সাক্ষাৎ এবং সোহেল তাজের মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।