Print

Rupantor Protidin

কারবালার শোক ও আত্মত্যাগের বার্তা নিয়ে শুরু আশুরার আনুষ্ঠানিকতা

প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৫, ২০২৫ , ৮:৫৪ অপরাহ্ণ | আপডেট: জুলাই ৫, ২০২৫, ৮:৫৪ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

আশুরার আনুষ্ঠানিকতা

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকার হোসেনী দালানে শুরু হয়েছে মূল আনুষ্ঠানিকতা। শনিবার (৫ জুলাই) মাগরিবের নামাজের পর খুতবা পাঠ ও আশুরার তাৎপর্য নিয়ে বয়ানের মাধ্যমে এ আয়োজনের সূচনা হয়।

দিনভর চলে দোয়া-মোনাজাত এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)-এর প্রতি প্রতীকী সম্মান প্রদর্শন। অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান আশুরার বিশেষ ফজিলতের আশায় এই দিনে নফল রোজা পালন করেছেন।

রোববার (৬ জুলাই) সকাল ১০টায় প্রতি বছরের মতো এবারও তাজিয়া মিছিল বের হবে। মিছিলটি হোসেনী দালান থেকে শুরু হয়ে লালবাগ, আজিমপুর হয়ে ঝিগাতলায় গিয়ে শেষ হবে। এ উপলক্ষে হোসেনী দালান প্রাঙ্গণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরাও নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন।

ইসলামী বর্ষপঞ্জির সূচনা মাস মহররমের দশম দিনকে ‘আশুরা’ বলা হয়। আরবিতে ‘আশারা’ অর্থ দশ। এই দিনটি ইসলামের ইতিহাসে একদিকে যেমন বরকত, রহমত ও বিজয়ের নিদর্শন, অন্যদিকে তেমনি হৃদয়বিদারক আত্মত্যাগের স্মারক।

আল্লাহ তাআলা এই দিনকে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মাধ্যমে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। এই দিনেই হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়, নুহ (আ.)-এর জাহাজ মহাপ্লাবনের পর ‘জুদি’ পর্বতে স্থির হয়, ইব্রাহিম (আ.) আগুন থেকে মুক্তি পান, ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে উদ্ধার পান, আইয়ুব (আ.) রোগমুক্ত হন, সুলাইমান (আ.) রাজত্ব ফিরে পান এবং হজরত ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেন ও আকাশে উঠিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া এই দিনে ইয়াকুব (আ.) তার হারানো পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে ফিরে পান। সুতরাং, আশুরা নবী-রাসুলদের বিজয়, মুক্তি ও করুণার দিন হিসেবেও বিবেচিত।

তবে আশুরা কেবল অতীতের স্মরণ নয়। এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয় ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় আত্মত্যাগ—কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদাত।

কারবালার মর্মন্তুদ ঘটনার শিক্ষা হলো অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অটল থাকা। হোসাইন (রা.) বলেছিলেন, ‘যে শাসক আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করে, সুন্নাহবিরোধী কাজ করে, জুলুম চালায়—তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ব্যর্থ হলে আল্লাহও তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’

আশুরা তাই আমাদের শিক্ষা দেয় অন্যায় ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে, ইনসাফ ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করতেও পিছপা না হতে।