Print

Rupantor Protidin

মুসলিমদের জন্য আল-আকসা নিষিদ্ধ করে দিল ইসরায়েল

প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ২৫, ২০২৩ , ১:০৯ অপরাহ্ণ | আপডেট: অক্টোবর ২৫, ২০২৩, ১:০৯ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

জেরুজালেমের ওল্ড সিটির আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। পাশাপাশি মুসলিমদের প্রবেশে বাধা দিয়েছে তারা।

ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফা এ তথ্য জানিয়েছে।

আল-আকসা কমপ্লেক্স পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জর্দানের নিযুক্ত ইসলামী সংস্থা ইসলামিক ওয়াকফ বলেছে, পুলিশ হঠাৎ মসজিদ কম্পাউন্ডের দিকে যাওয়ার সমস্ত গেট বন্ধ করে দেয়। এ সময় তারা ইহুদি উপাসকদের প্রার্থনা করতে সেখানে প্রবেশে অনুমতি দেয়। পাশাপাশি মসজিদের স্থিতিশীলতা লঙ্ঘন করে মুসলমানদের প্রবেশে বাধা দেয় ইসরায়েলি পুলিশ।

চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে এ অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার কারণে এদিন সকাল থেকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মসজিদে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। তারা প্রাথমিকভাবে সব মুসলিম উপাসকের প্রবেশ প্রত্যাখ্যান করেছে। এর আগে তারা শুধু বয়স্কদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল।

এ মাসের শুরুর দিকে কয়েক শ ইসরায়েলি সপ্তাহব্যাপী ইহুদি উৎসবের পঞ্চম দিন উদযাপন করতে আল-আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সে জোরপূর্বক প্রবেশ করেছিল।

ফিলিস্তিনের মানুষ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারিত্বের শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে এ কথা বলেন তিনি।

জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে যে হামলা চালিয়েছিল, তা ‘শূন্য থেকে’ হয়নি।

গুতেরেস বলেন, হামাসের হামলা শূন্য থেকে হয়নি। ফিলিস্তিনের মানুষ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারিত্বের শিকার হয়েছে। তাঁরা তাদের ভূখন্ড বসতিতে পরিণত হতে এবং সহিংসতায় জর্জরিত হতে দেখেছে। তাঁদের অর্থনীতি থমকে গেছে। এই মানুষগুলো বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তাঁদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁদের দুর্দশার রাজনৈতিক সমাধানের আশা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।

নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে জাতিসংঘের মহাসচিব আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার কারণে হামাসের ভয়ংকর হামলা ন্যায্যতা পেতে পারে না। আর ওই ভয়ংকর হামলার কারণে ফিলিস্তিনি মানুষদের সম্মিলিতভাবে যে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, তা-ও ন্যায্যতা পায় না।

ইসরায়েলের নাম উল্লেখ না করে গুতেরেস বলেন, বেসামরিক লোকজনকে রক্ষা করার অর্থ তাঁদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা নয়। সুরক্ষা দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, ১০ লাখ মানুষকে দক্ষিণে চলে যেতে বলা, যেখানে কোনো আশ্রয় নেই, খাবার নেই, পানি নেই, ওষুধ নেই, জ্বালানি নেই। আর মানুষকে দক্ষিণে যেতে বলে সেখানে বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গাজায় মানবিক আইনের যে সুস্পষ্ট লঙ্ঘন আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা নিয়ে আমি গভীর উদ্বিগ্ন। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, একটি সংঘাতে কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

৮ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। উপত্যকাটি অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ দিন ধরে চলা হামলায় সেখানে ৫ হাজার ৭৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি।

এদিকে গুতেরেসের এসব মন্তব্যের পর তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতিসংঘের ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলার্ড এরডান। এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে তিনি বলেন, যাঁরা ইসরায়েলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সবচেয়ে ভয়ংকর কর্মকান্ডের পেছনে যুক্তি দেখাতে চান, তাঁদের সঙ্গে কথা বলার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমি অনতিবিলম্বে তাঁর (গুতেরেস) পদত্যাগ দাবি করছি।