চেক প্রত্যাখ্যান বা ডিজঅনার সংক্রান্ত মামলায় আইনি জটিলতা এড়াতে ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা। তাদের মতে, এমন মামলায় সফলতা নির্ভর করে প্রমাণের যথার্থতা ও উপস্থাপনের ওপর।
জানা গেছে, চেক ডিজঅনারের ঘটনায় মামলা করার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন অভিযুক্ত ব্যক্তির দেওয়া মূল চেক। এরপর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি হলো চেক ডিজঅনার স্লিপ, যা ব্যাংক চেক প্রত্যাখ্যান করার পর প্রদান করে থাকে। সাধারণত “পর্যাপ্ত ব্যালেন্স নেই” কিংবা “অকার্যকর হিসাব” এই ধরনের মন্তব্যসহ ব্যাংক থেকে এ স্লিপ প্রদান করা হয়।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আইনি নোটিশ (লিগ্যাল নোটিশ)। চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অভিযুক্তকে আইনি নোটিশ পাঠানো বাধ্যতামূলক। এটি সাধারণত আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠানো হয়ে থাকে এবং এর একটি কপি সংরক্ষণ করতে হয়। কখনো কখনো পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারেও নোটিশ প্রকাশ করা হয়ে থাকে, যার কাগজের কাটিং মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করা উচিত।
চতুর্থ প্রমাণ হিসেবে ডাক বিভাগের রিসিপ্ট বা নোটিশ পাঠানোর প্রমাণপত্র গুরুত্বপূর্ণ। যদি প্রাপক নোটিশ গ্রহণ করেন, তাহলে প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ মামলাকে আরও শক্তিশালী করে। আর নোটিশ গ্রহণ না করলেও, রিসিপ্টটি দেখিয়ে প্রমাণ করা যায় যে বাদী পক্ষ যথাযথ নিয়ম মেনেই পদক্ষেপ নিয়েছে।
এছাড়া, মামলার প্রেক্ষাপট যদি ধার, চুক্তি বা আর্থিক লেনদেন স¤পর্কিত কোনো লিখিত ডকুমেন্টস দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়, তাহলে মামলার পক্ষে আরও জোরালো অবস্থান তৈরি হয়। যেমন: ঋণ চুক্তিপত্র, বিনিয়োগ চুক্তি, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত আর্থিক চুক্তি ইত্যাদি।
আইনজীবীদের পরামর্শ, মূল চেক, চেক ডিজঅনার স্লিপ, লিগ্যাল নোটিশের কপি, ডাক বিভাগের রিসিপ্ট ও প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ, এবং লেনদেন-সংশ্লিষ্ট চুক্তিপত্র—এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস সংরক্ষণ ও সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারলে চেক ডিজঅনার মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।