দেশজুড়ে ভোট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের পর আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ফেব্রুয়ারিতে ভোট নিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তবে এখনও নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে কোন সবুজ সংকেত দেয়নি সরকার। ফলে নির্বাচন কমিশন এখন সরকারের দিকেই তাকিয়ে আছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন রোববার ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্পষ্টভাবেই বলেছেন, “ভোটের তারিখ নির্ধারণে সরকারের কাছ থেকে কোনো ক্লিয়ারেন্স পায়নি ইসি।”
তিনি বলেন, “কখন ভোট হবে সেটা সরকারের বিষয়। তাই সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। তবে জাতীয় নির্বাচন যখনই হোক ইসি নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, “আমরা নিজেদের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে সরকার। ফেব্রুয়ারিতে যদি ভোট হয় তাহলে এর মধ্যে যে সময় আছে তাতে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। আসলে বিষয়টা হলো, সরকার আন্তরিক হলে যে কোন সময়ই ভোট হতে পারে। প্রস্তুতিতে সমস্যা হবে না। আর আন্তরিক না হলে তো অন্য কথা।”
তবে নির্বাচনের পরিবেশ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এখনও শঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে, এনসিপিসহ বেশ কয়েকটি দলের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিও রয়েছে। বিএনপিসহ অন্য বেশকিছু দল জাতীয় নির্বাচনই আগে অনুষ্ঠানের পক্ষে। এ ইস্যুর সমাধান এখনও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা পর্যায়েই রয়েছে, সমাধান হয়নি।
এর ফলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে কিছুটা শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এমন আশঙ্কা টের পাওয়া যাচ্ছে মাছউদের কথাতেও।
তিনি বলেন, “এটা সত্যি যে, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হলে এর আগে আমাদের পক্ষে পরীক্ষামূলকভাবে দু’একটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা সম্ভব। এর বেশি না। এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যমতে পৌঁছতে হবে।”
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ বর্তমানে আটকে রয়েছে। ভোট আয়োজনের জন্য অপরিহার্য এমন নীতিনির্ধারণী বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রধান আইন আরপিও সংশোধন, নির্বাচনি আচরণ বিধিমালা ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন। আরও আছে, রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সংলাপ, ভোটার তালিকা আইন সংশোধন, নির্বাচন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ এবং পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধন কার্যক্রম।
তবে যেসব কাজের সঙ্গে সংস্কার ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই, সে কাজগুলোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে ইসি। এরই অংশ হিসাবে ভোটগ্রহণের কাজে ব্যবহৃত স্বচ্ছ ব্যালট বক্স, অফিশিয়াল সিল, মার্কিং সিল, গানি ব্যাগ, লাল গালাসহ ভোটগ্রহণের মালামাল সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। নির্বাচনি বিভিন্ন ফরম ও প্যাকেট ছাপার প্রস্তুতি নিতে বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ বলেন, “আমরা তো প্রতিদিনই ভোটের জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ করছি। ফলে সরকারের কাছ থেকে সিগন্যাল পাওয়ার পর বাকি কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করে ফেলা হবে।”