মধ্য ইসরাইলে ইরানের ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলায় এখন পর্যন্ত
একজন নিহত এবং অন্তত ১৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
চ্যানেল ১২ নিউজকে ইসরাইলের জরুরি পরিষেবার মুখপাত্র জানিয়েছেন, শনিবার সকালে মধ্য
ইসরাইলের আবাসিক ভবনগুলোতে ইরানের সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও জানান, আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকিদের তুলনামূলকভাবে
হালকা আঘাত রয়েছে। আহতদের শামির মেডিকেল সেন্টার এবং উলফসন মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি
করা হয়েছে।
আল জাজিরার বরাতে জানা যায়, হামলার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত
করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে ইসরায়েলিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরে
যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েল চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় ভোরে চালানো
এই হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন এবং একাধিক ঘরবাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চ্যানেল ১২ আরও জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে অন্তত দুইজন ব্যক্তি একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের
নিচে আটকা পড়েন। এই ঘটনায় মোট ১৪ জন আহত হয়েছে বলেও তারা দাবি করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ইরানের সর্বশেষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর
নাগরিকরা বোমা আশ্রয়কেন্দ্র ত্যাগ করতে পারবেন, তবে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তাদের
আশ্রয়কেন্দ্রের নিকটেই অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলকে সহায়তা করা দেশগুলোকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। সিএনএন-এর এক
প্রতিবেদনে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ ইরানি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়— “যেসব দেশ
ইসরায়েলকে রক্ষা করার চেষ্টা করবে, তাদের আঞ্চলিক ঘাঁটি ও অবস্থানগুলো আমাদের নতুন
লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইরান চূড়ান্ত
প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার রাখে।”
এর আগে শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাতে ইসরাইল প্রায় ২০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানের ১০০টি স্থানে
বিমান হামলা চালায়। এতে ইরানের সেনাপ্রধান, রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান, ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী
এবং অর্ধশতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
ইসরাইলের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি, সামরিক
স্থাপনা এবং আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম। পরবর্তীতে শুক্রবার দিনজুড়ে আরও কয়েকটি হামলা চালানো হয়।
এর জবাবে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’ নামে ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০০টি ব্যালিস্টিক
ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে একাধিক স্থাপনা ধ্বংস হয় এবং বহু বেসামরিক নাগরিক হতাহত হন।