যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত বলে তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। ক্যান্সার তার শরীরের হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার ৮২ বছর বয়স্ক মি. বাইডেনের শরীরে এই রোগ শনাক্ত হয়। তিনি প্রস্রাব জনিত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন।
চিকিৎসক জানিয়েছেন তার ক্যান্সার কিছুটা আগ্রাসী ধরনের এবং গ্লিসন মাত্রা দশের মধ্যে নয়। এর মানে হলো এটি একটি উচ্চ ধাপের ক্যান্সার, যা শরীরে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
মি. বাইডেন ও তার পরিবার চিকিৎসার সম্ভাব্য উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার কার্যালয় বলছে, যে ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে তা কিছুটা হরমোন সংবেদনশীল হওয়ায় এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ক্যান্সারের খবর প্রকাশের পর সাবেক প্রেসিডেন্টকে সমর্থন করে অনেকে বিবৃতি দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন যে, তিনি এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এই খবর শুনে দু:খ পেয়েছেন।
“আমরা জিল ও পরিবারের প্রতি আন্তরিক শুভকামনা জানাচ্ছি। আমরা দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি,” লিখেছেন তিনি। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, তিনি ও তার স্বামী বাইডেন পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছেন।
দ্যা ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি বলছে, প্রতি ১০০ জন পুরুষের মধ্যে ১৩ জনই জীবনের একটা পর্যায়ে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাদের মতে বয়সের সাথে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ উইলিয়াম ডাহুট বিবিসিকে বাইডেনের ডায়াগনোসিসের যেসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তার ভিত্তিতে বলেছেন, এই ক্যান্সারটির চরিত্রই অনেকটা আগ্রাসী।
“সাধারণত ক্যান্সার হাড়ে ছড়িয়ে পড়লে সেটাকে আমরা নিরাময়যোগ্য ক্যান্সার মনে করি না,” বলেছেন তিনি। তিনি অবশ্য বলেছেন প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসায় অনেক রোগীর মধ্যেই ভালো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। “এবং অনেকে চিকিৎসা নিয়ে অনেক বছর বাঁচতে পারেন,” বলেছেন তিনি।
বাইডেন হোয়াইট হাউজ ছাড়ার পর জনসম্মুখে এসেছেন কমই। তিনি গত এপ্রিলে শিকাগোতে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আয়োজিত একটি সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
মে মাসে বিবিসিকে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন তিনি, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিলো তার জন্য কঠিন। এতে স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ‘এর সমর্থনে কোনো ধরনের প্রমাণ নেই’।
বহু বছর ধরেই জো বাইডেন ক্যানসার গবেষণার পক্ষে প্রচার চালিয়ে আসছেন। ২০২২ সালে তিনি ও তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেন ‘ক্যানসার মুনশট’ উদ্যোগ পুনরায় শুরু করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিলো ২০৪৭ সালের মধ্যে ৪০ লাখের বেশি ক্যানসারের মৃত্যু প্রতিরোধে গবেষণার গতি বাড়ানো।
বাইডেনের বড় ছেলে বাউ বাইডেন ২০১৫ সালে মস্তিষ্কের ক্যানসারে মারা গিয়েছিলেন।