পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে ইরানের তেল রফতানি শূণ্যে নামিয়ে আনা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সমঝোতার চেষ্টা হলেও নিজেদের নীতিগত অবস্থান থেকে একচুলও সরে আসবে না তেহরান।
গত কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু ইস্যুতে উত্তেজনার পারদ বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সৌদি আরবে বিনিয়োগ সম্মেলনে দাঁড়িয়ে ইরানকে স্পষ্ট বার্তা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
বলেন, পরমাণু চুক্তির আলোচনায় ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় না আসে, তবে তেহরানের তেল বাণিজ্য নামিয়ে আনা হবে শূন্যে। এ সময় ট্রাম্প স্মৃতিচারণ করে বলেন, তার প্রথম মেয়াদে তেহরানের অর্থনীতির শিরা ছিঁড়ে দিয়েছিল ওয়াশিংটন।
ট্রাম্পের কথায়,
আমি ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চাই। যদি আমি এ চুক্তি করতে পারি, তাহলে আমি খুব খুশি হব। কারণ এতে মধ্যপ্রাচ্য এবং পুরো বিশ্বকে আরও নিরাপদ অবস্থানে থাকবে। কিন্তু যদি ইরানের নেতৃত্ব এই শান্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে যেতে থাকে, তাহলে আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না — তখন আমরা আবার আগের মতোই সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করব, ইরানের তেল রপ্তানি শূন্যে নামিয়ে আনব।
বুধবার (১৪ মে) আরব উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইউএস-জিসিসি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েও ট্রাম্প একই কথা জানান। বলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে চুক্তি করতে চান, তবে দেশটিকে পারমাণবিক অস্ত্রত্যাগ করতে হবে।
এমন হুমকির মধ্যেই চীনের সঙ্গে তেল বাণিজ্য বন্ধে একযোগে ইরানের ২০টিরও বেশি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়। সিঙ্গাপুর, চীনের কুইংডাওসহ বিভিন্ন কোম্পানি ইরানি তেলের উৎস লুকিয়ে সেটি চীনে পাঠাচ্ছিল বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের।
ওয়াশিংটন আরও দাবি করে, তেল বিক্রির অর্থ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং হুতি গোষ্ঠীর হামলায় অর্থায়নে ব্যবহার করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে এবং মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে লেনদেন নিষিদ্ধ করা হবে।
তবে এসব হুমকি ও নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পিছু হটেননি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। পার্লামেন্ট সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, আলোচনা চলবে, কিন্তু নীতিগত অবস্থান থেকে একচুলও সরবে না ইরান। আর এ আলোচনার ওপর পরমাণু কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নির্ভর করতে পারে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন দিনি।